শ্রদ্ধা কান্ডের ছায়া এবার বারুইপুরে – প্রাক্তন নৌসেনাকে পাঁচ টুকরো করলো ছেলে এবং স্ত্রী

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বারুইপুর :: বারুইপুরে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর খুনের পেছনে তার ছেলে ও স্ত্রী? এমনটাই মনে করছিলেন তদন্তকারীরা। শেষপর্যন্ত সেটাই সত্যি হল। নিহত উজ্জ্বল চক্রর্তীর স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিস।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছিল শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয় উজ্জ্বলকে। পরে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জাম দিয়ে দেহ ৬ টুকরো করা হয় এবং তা বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয় সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে গিয়ে। তদন্তে নেমে পুলিস উজ্জ্বলের বাড়ির সামনের পুকুর থেকে তার দেহের একটি অংশ উদ্ধার করে। বাকী দেহাংশ কোথাও তা এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিস। সবেমিলিয়ে একেবারে দিল্লি শ্রদ্ধা ওয়াকারকাণ্ডের ছায়া ।

কীভাবে খুন? পুলিস সূত্রে খবর, উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলেকে জেরা করে জানা গিয়েছে, মদ খেয়ে স্ত্রী ও ছেলের উপরে অত্যাচার করতেন উজ্জ্বল। তাতে পুরনো ক্ষোভ ছিল উজ্জ্বলের উপরে। গত সোমবার বচসা চলাকালীন উজ্জ্বলকে ধাক্কা দেওয়া হয়। তাতেই তিনি পড়ে যান। তখনই তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।

কিন্তু ওইদিন সন্ধেয় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ঘরে ফেরেননি বলে পুলিসে ডাইরি করেছিলে উজ্জ্বলের স্ত্রী। পুলিস তদন্তে নেমে ওই দুজনকে জেরা করলেও কিছু কবুল করতে চায়নি তারা। পরে জেরায় ভেঙেপড়ে উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলে।

বৃহস্পতিবার রাতে বারুইপুর-মল্লিকপুর রোডের ডিহি এলাকার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় উজ্জ্বল চক্রবর্তীর অর্ধেক দেহ। ঘটনার খবর পেয়ে বারুইপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দেহাবশেষ উদ্ধার করে। কিন্তু ৫৪ বছর বয়সী ওই প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দুটি হাত ও কোমরের নীচ থেকে শরীরের বাকি অংশের কোনও খোঁজ মেলেনি তখন। মৃতদেহের মুখও প্লাস্টিক দিয়ে আটকানো ছিল।

গত ১৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন উজ্জ্বল চক্রবর্তী। আগে নৌসেনা বাহিনীতে কর্মরত থাকলেও বর্তমানে তিনি একটি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। ১৪ নভেম্বর কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর বেরিয়ে আর ফেরেননি। তাঁর নেশা করার অভ্যাস ছিল। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় তিনি বেরতেন। কিন্তু ১৪ তারিখ বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। এরপরই পরিবারের সদস্যরা বারুইপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপর বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হয় দেহাবশেষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 4 =