সজল দাশগুপ্ত :: সংবাদ প্রবাহ :: স্পোর্টস ডেস্ক :: মঙ্গলবার ৯,জানুয়ারী :: ক্রিকেটের পথচলা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রচুর কিংবদন্তী এবং প্রতিভাবান ক্রিকেটারের দেখা পেয়েছে। তাদের মধ্যে সবদিক বিবেচনায় সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার একজনই। ক্রিকেটপ্রেমীদের যদি জিজ্ঞেস করা হয়s সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার কে? এর উত্তরে অধিকাংশ ক্রিকেটপ্রেমী দ্বিতীয়বার না ভেবেই স্যার ডোনাল্ড ব্রাডম্যানের নাম বলবেন।
তবে স্বয়ং ডন ব্রাডম্যান কিন্তু ভারতীয় জনগণের কাছে ক্রিকেটের ঈশ্বর তেন্ডুলকারে মুগ্ধ ছিলেন । ডন ব্রাডম্যান বলেছিলেন, একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে এই ভারতীয় তাকে তার কথা মনে করিয়ে দেয়। আমি টিভিতে তার ব্যাটিং দেখেছি, তার ব্যাটিং কৌশল আমাকে অভিভূত করেছে। তবে শচীন তেন্ডুলকার নিজেও চাইবেন না দ্য ডনের সাথে তার তুলনা করা হোক।
কিন্তু কিছু ক্রিকেট প্রেমীরা মনে করেন শচীন তেন্ডুলকার খুব বেশি পিছিয়ে নেই । ভারতের জনগণের কাছে তাদের ক্রিকেটের ঈশ্বরই সর্বকালের সেরা। ভিন্ন সময়ের দুই কিংবদন্তী ক্রিকেটার ডন ব্রাডম্যান এবং শচীন তেন্ডুলকারের মধ্যে তুলনা করতে গেলে যেসব ব্যাপার সামনে আসবে, সেইসব বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো।
শচীন তেন্ডুলকারের ৩৫০০০+ আন্তর্জাতিক রান রয়েছে। যেখানে ব্র্যাডম্যানের রান অনেকটাই কম ৬৯০০+ ।ব্রাডম্যানের যুগে ক্রিকেট ছিলো কেবলই বিনোদনের জন্য। সেই রকম কোন চাপ ছিল না। কারণ খেলার লাইভ টেলিকাস্ট হতো না। সাপোর্টারর্স এক্সপেকটেশন প্রেসার বলে কিছু ছিলো না। ব্র্যাডম্যান কিন্তু কখনও ওয়ানডে খেলেননি। শুধু একটা ফরম্যাটের ৭০০০ রান করেছেন।
আধুনিক যুগের ব্যাটসম্যানরা অনেক সুবিধা পেয়েছেন ব্রাডম্যানের যুগের তুলনায়। গার্ড , হেলমেট, মানসম্পন্ন মাঠ এবং পছন্দমত ব্যাটের এইসব কারণে বর্তমান যুগে রান করা অনেকটাই সহজ। ডন ব্রাডম্যানের সময় ব্যাটিং পিচের পরিচর্যা বর্তমানের মতো হতো না। অনেক সময় পিচ ব্যাটিং করার জন্য অনুকুল থাকত না তাও ব্যাটিং করতে হতো।
ব্র্যাডম্যান তাঁর ক্যারিয়ারে মাত্র ১ টি দেশের বিপক্ষেই ৮৫% ম্যাচ খেলেছেন। চেনা কন্ডিশনেই বেশি খেলেছেন। অন্য দিকে শচীন টেন্ডুলকার অনেক কয়টি দেশের বিরুদ্ধে খেলেছেন।অসাধারণ ক্ষমতা ছিলো সবধরনের পরিবেশে খেলার। সবধরনের বোলার এবং সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দাপটের সাথে ব্যাটিং করতেন শচীন টেন্ডুলকার।
ডন ব্রাডম্যান আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে ৮০ ইনিংসে ২৯টি শত রান করেছেন। প্রতি ২.৭৫ ইনিংসে একটি শতক হাঁকিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে শচীন টেন্ডুলকার ২০০ টেস্টে ৫৩.৭৮ ব্যাটিং গড়ে রান করেছেনs। তিনি ৩২৯ ইনিংসে ৫১টি শতরান করেছেন।
বড়ো ইনিংস খেলার ক্ষেত্রে ডন ব্যাটম্যানের জুড়ি মেলা ভার। টেস্ট ক্রিকেটে তার ২৯টি সেঞ্চুরি রয়েছে যার মধ্যে ১২টি ডাবল সেঞ্চুরি এবং দুটি ট্রিপল সেঞ্চুরি। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটেও তিনি রাজার মত খেলেছেন ৩৭ টি ডাবল সেঞ্চুরি ও চারটি ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছেন।১৯৩০ সালে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে তার অপরাজিত ৪৫২ রানের ইনিংসটি এখনও কোনো অজি ব্যাটসম্যানের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস।
অপরদিকে দেখতে হলে শচীন টেন্ডুলকার তার ৫১টি টেস্ট সেঞ্চুরির মধ্যে মাত্র ছয়টিকে ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপান্তরিত করতে পেরেছেন। এছাড়া একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২০০ রান করে অপরাজিত ছিলেন শচীন।