সুদেষ্ণা মন্ডল / সজল দাশগুপ্ত :: সংবাদ প্রবাহ :: নিউজ ডেস্ক :: সোমবার ১৮,ডিসেম্বর :: ১৯৭২ সালে ৮৩ বছর বয়স অস্কার নিতে মঞ্চে ওঠেন , সেই সময় টানা বারো মিনিট ধরে চলে হাততালির ঝড় । অস্কারের ইতিহাসে যা ছিল দীর্ঘতম অভ্যর্থনা। আবেগের কারণে কিছুই তিনি বলতে পারেননি সে দিন |
ব্রিটিশ এই কিংবদন্তি মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ইংল্যান্ডে কুড়ানো তুমুল জনপ্রিয়তাকে সাথে করে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রে। সেই দেশ অনেকবার চেয়েছে তাকে নাগরিকত্ব দিতে। তিনি নেননি। তিনি কখনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে চাননি। এরপর যুক্তরাষ্ট্র একসময় ‘কমিউনিস্ট’ বলে ‘গালি দিয়ে’ তার জন্য দরজা বন্ধ করে দেয়। তাই তিনি জীবন কাটানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন সুইজারল্যান্ডকে।
যখন খ্যাতির শীর্ষে তখন একবার দুই দিনের জন্য জন্মভূমি ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। অল্প সময়ের মধ্যে ঘটে গেল অবাক কাণ্ড। মাত্র দু’দিনের ভিতরে তাঁর কাছে প্রায় ৭৩ হাজার চিঠি আসে ! তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, তাঁর কাছে সৌন্দর্য মানে নর্দমায় ভেসে যাওয়া একটা গোলাপ ফুল। এই যে বীভৎস দ্বন্দ্ব থেকে সৃষ্টি হওয়া সৌন্দর্য, এখানেই বাস্তবতার সব নিষ্ঠুর দরজা খুলে যায়।
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দুঃসহ শৈশব বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছেন। তাঁর মাতাল বাবা, মাকে নির্যাতন করত । একসময় সেই মাতাল বাবা তাঁর মাকে ছেড়ে যায়, তাতে সামান্য সময়ের জন্য হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন । কিন্তু কতক্ষণের জন্য? পরেরবার খিদে লাগার আগেপর্যন্ত !
তাঁর মা কখনও সস্তা নাটকে অভিনয় করতেন, কখনও সেলাই করতেন, কখনও বা মা–ছেলে মিলে ভিক্ষাও করেছেন। এমন হয়েছে নরম নিষ্পাপ হাত গুলি দিয়ে দিব্যি চুরি করতে হয়েছে। এর মাঝেই অসুখে পড়ে ভুগে তাঁর মারা যান মা। আর অদ্ভুত তাঁর নির্বাক কমেডি নাড়া দিতে থাকে সমগ্র ইংল্যান্ডকে। তাই তো তিনি বলেছেন, সত্যিকারের কমেডি তখনই করা যায়, যখন নিজের সব দুঃখ, বঞ্চনা সফলভাবে গিলে ফেলা যায়।
আর তাঁর জনপ্রিয়তা সম্পর্কে যত বলা যায় তত কম হবে। রাশিয়ার এক ভক্ত নভোবিজ্ঞানী তাঁর আবিষ্কৃত উপগ্রহের নাম রাখেন ৩৬২৩ চ্যাপলিন ! আর এদিকে জাঁদরেল চলচ্চিত্র নির্মাতা জঁ লুক গদার চ্যাপলিনকে তুলনা করেছিলেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির সঙ্গে |