নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বসিরহাট :: ২০শে,এপ্রিল :: মন্দিরের মূল দ্বারের সামনে সারিবদ্ধভাবে শুয়ে আছেন সন্ন্যাসীরা আর তাঁদের উপর দিয়েই হাঁটতে হাঁটতে মাথায় শিব নিয়ে বেরিয়ে এলেন মন্দিরের পূজারি। এই চিত্র দেখা গেল নীল পুজোর দিন সকালে বসিরহাটের শতাব্দী প্রাচীন বিশপুর শিবমন্দিরে। জানা গেল বহু বছর ধরে এই প্রথা পালিত হয়ে আসছে।
এদিন সকাল ছ’টা নাগাদ মন্দিরের পাশের পুকুর থেকে স্নান সেরে মন্দিরে চলে আসেন সমস্ত সন্ন্যাসী। তাঁরা শিব মন্দিরের চারপাশে প্রদক্ষিণ করা-সহ অন্যান্য রীতিনীতি পালন করেন। এরপর মন্দিরের গর্ভগৃহে থাকা শিবের মূলমূর্তিকে ডাব, দুধ, ঘি চিনি দিয়ে স্নান করানো হয়। শেষে গর্ভগৃহ থেকে বেশ কয়েকটি ছোট শিবমূর্তি নিয়ে মন্দিরের মূল দ্বার দিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
তখন মূল দ্বারের বাইরে সারি দিয়ে শুয়ে থাকেন সন্ন্যাসীরা। তাঁদের মাড়িয়েই চলে যান বিশপুর শিবমন্দিরের পুরোহিত। শিবের মূর্তিগুলি প্রধান সন্ন্যাসীর হাতে তুলে দেন তিনি। সেই মূর্তি নিয়ে সন্ন্যাসীরা সাতটি দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামের প্রায় ৬০০ বাড়িতে যান। এবং গ্রামবাসীদের বাড়িতে ফের শিবকে দুধ, ডাব, ঘি, চিনি ও আকন্দ ফুল, বেলপাতা দিয়ে স্নান করানো হয়।
বিশপুর শিবমন্দিরের পূজারি সুকুমার মিশ্র জানিয়েছেন, “আমাদের এখানে বাবার স্বপ্নাদেশ রয়েছে যে, নীল পুজোর দিন মন্দিরের বাইরে বাবার মূর্তি বের করার সময় যাঁরা সন্ন্যাসী থাকবে তাঁদের বুকের উপর দিয়ে হেঁটেই পূজারি বাবার মূর্তি বের করবে।’ জানা গিয়েছে, যাঁরা মন্দিরের এই রীতি পালনে অংশ নিলেন, তাঁদের সকলেরই কোনও না কোনও ইচ্ছাপূরণ হয়েছে।
তাই মানত পূরণ করতেই এসেছেন তাঁরা। নীল পুজো উপলক্ষে বসিরহাটের বিশপুর শিবমন্দিরে বহু ভক্তের সমাগম হয়েছিল। ভিড় সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় মন্দির কর্তৃপক্ষকে। সন্ধ্যাবেলায় এসেছিলেন অনেকেই।