সম্পর্ক জোরদারে সফল ভারত সফর শেখ হাসিনার

নিউজ  ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: নয়াদিল্লি ::
সম্পর্ক জোরদারে সফল ভারত সফর শেখ হাসিনার
ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পরই প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন করে চলেছেন। এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনা সম্প্রতি সফলভাবে ভারত সফর করেছেন।

শেখ হাসিনার সফরের সময় ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সাতটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং যে নতুন প্রকল্প উদ্বোধন ও ঘোষণা করা হয়েছে তা অর্থনীতি, সংযোগ এবং প্রতিরক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরবর্তী কয়েক বছরের জন্য সহযোগিতার দুয়ার নির্ধারণ করবে।

গত পাঁচ বছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দ্বিগুণ হয়ে ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কিছু উদ্যোগ নতুন করে শুরু করা হয়েছে।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাক্ষরিত চুক্তি এবং ঘোষণাও যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। তবে শেখ হাসিনার এই সফরে বাংলাদেশের প্রকৃত প্রাপ্তি ছিল শক্তিশালী কৌশলগত বৈশিষ্ট্য যা আসলে সর্বত্রই স্পষ্টভাবে চোখে পড়েছে। যার রেশ ৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা ঢাকায় ফেরার পরও অব্যাহত ছিল।

এর আগে ২০১৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ভারত সফরে গিয়েছিলেন।

ভারত সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জগদীপ ধনকরের সঙ্গে দেখা করেন। ২০১৫ সালের পর থেকে এই নিয়ে মোদির সঙ্গে ১২ বার সাক্ষাৎ করেছেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা ৪ সেপ্টেম্বর ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্ব এবং বাংলাদেশে ভারতের ঐতিহাসিক অবদানের কথা তুলে ধরেন। ভারতের সেই অবদান আজও অব্যাহত রয়েছে বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। ভারতকে ‘পরীক্ষিত’ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশটি (ভারত) প্রয়োজনের সময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, প্রথমে ১৯৭১ সালে এবং পরবর্তী সময়েও।

এ সময় শেখ হাসিনা সম্প্রতি বাংলাদেশি নাগরিকদের সাহায্যের জন্য ভারত সরকারের বিশেষ প্রশংসা করেন। বিশেষ করে দুটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। প্রথম বিষয়টি হলো, রাশিয়ার অভিযান শুরুর সময় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ভারত সরকারের সহায়তা।

দ্বিতীয়টি হলো করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সময় ভারতের উদ্যোগ। করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার সময় ভ্যাকসিন মৈত্রী (বন্ধুত্ব) কর্মসূচির অধীনে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোতে টিকা সরবরাহের প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।

এদিকে, ৬ সেপ্টেম্বর দেওয়া এক বিবৃতিতে মোদি আস্থা প্রকাশ করেন যে ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব আগামী ২৫ বছরে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।

বিবৃতিতে মোদি বলেন, আজ বাংলাদেশ-ভারতের সবচেয়ে বড় ‍উন্নয়ন সহযোগী এবং এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। মানুষে মানুষে সংযোগের ক্ষেত্রে অব্যাহত উন্নতি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বহু দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছি।  কোভিড মহামারি ও সাম্প্রতিক বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা দরকার। মোকাবিলায় সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা সহযোগিতা বিস্তৃত করেছি।

আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে বন্যার তাৎক্ষণিক তথ্য বিনিময় করছি এবং আমরা আলোচনা করে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যে শক্তি আমাদের শত্রু, তাদের যেন আমরা একসঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী বিবৃতিতে আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুত বাড়ছে। তথ্যপ্রযুক্তি, মহাকাশ ও পারমাণবিক খাতে সহযোগিতা বিস্তৃত করার আলোচনা আমরা করেছি। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন করার বিষয়েও আলোচনা চলমান আছে। ১৯৭১ সালের আদর্শকে জীবন্ত রেখে এই ধরনের শক্তিকে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করা জরুরি, যারা আমাদের পারস্পরিক বিশ্বাসকে আঘাত করতে চায়।

সূত্র: ইউরোপীয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডি

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 12 =