সরকারের আমন্ত্রণকে ‘সম্মান’ জানিয়ে দিঘার জগন্নাথ ধাম পৌঁছোলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: বৃহস্পতিবার ১,মে :: রাজ্য সরকারের আমন্ত্রণকে ‘সম্মান’ জানিয়ে দিঘার জগন্নাথধাম পৌঁছোলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

শুভ অক্ষয় তৃতীয়ার পুন্যলগ্নে দিঘা জগন্নাথ ধামের দারোদঘাটন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈদিক মন্ত্র উচ্চারনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো এক নতুন ইতিহাস।

সারা রাজ্য তথা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার মানুষ এই ঐতিহাসিক শুভক্ষনের স্বাক্ষী থাকলেন। দিনভর নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই অনুষ্ঠান।

জগন্নাথধাম উদ্বোধনে হাজির হন সস্ত্রীক বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষকে স্বাগত জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস। মন্দিরে পুজো দিয়ে দেখা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে।

বুধবার বেলা সওয়া তিনটে নাগাদ দিঘায় জগন্নাথ ধামের আনুষ্ঠানিক দ্বারোদ্ঘাটন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সেই মন্দিরে পৌঁছেছেন দিলীপ। মুখ্যমন্ত্রীর এই জগন্নাথধাম কর্মসূচি বয়কট করে বুধবারই কাঁথিতে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

রাজ্য প্রশাসন প্রথমে অনুমতি না দেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে কাঁথিতে শুভেন্দু ‘সনাতনী সমাবেশ’ করেছেন। সেই কাঁথি পেরিয়েই দিঘা যান দিলীপ। তবে ‘সনাতনী সমাবেশে’ যাননি।

মঙ্গলবার রাতেই দিলীপ জানিয়েছিলেন যে, বুধবার সময় পেলে তিনি দিঘার জগন্নাথধামে যাবেন। হাওড়ার শ্যামপুরে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও বুধবার তাঁর আমন্ত্রণ ছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘‘শ্যামপুরের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পরে যদি সময় পাই, তা হলে দিঘা যাব। মুখ্যসচিব চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’’

তবে শেষ পর্যন্ত সেই ‘সময় পাওয়া’ দিলীপের হয়ে উঠবে কি না, তা দুপুর পর্যন্তও স্পষ্ট ছিল না। শ্যামপুরের অনুষ্ঠান থেকে তিনি বেরোনোর পরে স্পষ্ট হয় যে তিনি দিঘা যাচ্ছেন।

রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির কথায়, ‘‘অক্ষয় তৃতীয়ার দিন একটা শুভ দিন। এই দিনে আমরা পূজার্চনা, ধর্মীয় কর্মসূচিতে অংশ নিয়েই থাকি। এ রকম একটা দিনে দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন হচ্ছে। সেখানে আমাকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। কেন যাব না?’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতার এই কর্মকাণ্ডের মধ্যে ‘হিন্দু জাগরণে’র প্রয়াসও দেখছেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘‘অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে হিন্দু জাগরণের অনেক কর্মসূচি থাকে। মন্দির প্রতিষ্ঠাও তো হিন্দু জাগরণেরই কাজ।’’

তার পরেই স্বভাবসিদ্ধ রসবোধে দিলীপের মন্তব্য, ‘‘ভগবান আমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য সাড়ে তিনশো কিলোমিটার চলে এসেছেন। আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য দু’শো কিলোমিটার যেতে পারব না!’’

রাতে দিঘাতেই থাকবেন কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদ। কারণ যাঁরা জগন্নাথধাম উদ্বোধনের আমন্ত্রিত হয়ে দিঘায় হাজির হয়েছিলেন, দিলীপ পৌঁছোনোর আগেই তাঁদের অধিকাংশ কলকাতার দিকে রওনা দিয়েছিলেন।

দিলীপ নিজেও বলেন, ‘‘দিঘার দিকে যেতে যেতেই দেখছি অনেকের গাড়িই আমার পাশ দিয়ে কলকাতার দিকে ফিরছে। মুখ্যমন্ত্রী তো হেলিকপ্টারেই ফিরে গিয়েছেন। তাই পৌঁছে কার কার সঙ্গে দেখা হবে জানি না।’’ দিলীপের কথায়, ‘‘মন্দিরে যাওয়াটা প্রধান উদ্দেশ্য। আগে যাই। ভগবানকে প্রণাম করি। তার পর ঠিক করব থাকব কি না।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − 5 =