সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নিত্য পূজো ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজবংশের শেষ যুবরাজ উদয়চাঁদ মহতাব ট্রাস্ট কমিটি গঠন করেন – তাঁর পুজো প্রায় ৩৫০ বছরেরও বেশি পুরনো।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: শুক্রবার ১৯,সেপ্টেম্বর :: বর্ধমানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী মা সর্বমঙ্গলার আসল নাম মা সর্বলা। সবার মঙ্গল করে বলে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এর নাম মা সর্বমঙ্গলা নামে পরিচিত বলে জানান মন্দিরের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান পুরোহিত করুন কুমার ভট্টাচার্য।

বাংলার লৌকিক দেবতা বটে। তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে সর্বমঙ্গলা নামে পূজিত হন। মন্দিরটিকে অনেকে শক্তিপীঠ বলে থাকেন। সর্বমঙ্গলা মন্দিরের নিত্য পূজো ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে রাজবংশের শেষ যুবরাজ উদয়চাঁদ মহতাব ট্রাস্ট কমিটি গঠন করেন। তাঁর পুজো প্রায় ৩৫০ বছরেরও বেশি পুরনো।সর্বমঙ্গলার ঘট প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শারদ উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়ে থাকে পূর্ব বর্ধমানের। কুমারী পুজোর রীতি আছে। বাদ্যযন্ত্র সহকারে বিশাল শোভাযাত্রার ঢল নামে পুন্যার্থীদের। দেবী সর্বমঙ্গলার ঘটপূর্ন জল নিয়ে ঘোড়ার গাড়ি নানা পথ পরিক্রমা করে । সৰ্বমঙ্গলা দেবীর মূর্তি কষ্টিপাথরের অষ্টাদশভূজা সিংহবাহিনী ‘মহিষমর্দিনী’।

বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দির অবিভক্ত বাংলার প্রথম নবরত্ন মন্দির। প্রাচীন এই মন্দির বর্ধমানের মানুষের কাছে পবিত্র তীর্থস্থান।

কথিত আছে “প্রায় ৩৫০ বছর আগে শহর বর্ধমানের উত্তরাংশে বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়ার, বাগদী পাড়ায় বাগদীরা পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে একটি শিলা মুর্তি পেয়েছিলেন। সেটিকে প্রস্তর খণ্ড ভেবে তার উপরে শামুক, গুগলি থেঁতো করত তারা।

সেই সময় দামোদর নদ-লোগোয়া চুন তৈরির কারখানার জন্য শামুকের খোলা নেয়ার সময় শিলা মূর্তিটি চলে যায় চুন ভাটায়। তখন শামুকের খোলার সাথে শিলা মুর্তিটি পোড়ানো হলেও মূর্তির কোন ক্ষতি হয়নি। সেই রাতেই স্বপ্নাদেশ পাওয়া মাত্র বর্ধমান মহারাজা সঙ্গম রায় শিলা মুর্তিটিকে নিয়ে এসে সর্বমঙ্গলা নামে পুজো শুরু করেন।

পরবর্তীকালে ১৭০২ সালে টেরাকোটার নিপুন কারুকার্য খচিত সর্বমঙ্গলা মন্দির নির্মাণ করেন মহারাজাধিরাজ কীর্তিচাঁদ মহতাব”।

মন্দিরের পুরোহিত জানান, সর্বমঙ্গলা মন্দিরে আরাধ্যা দেবী হলেন দেবী দুর্গা। দেবী সবার মঙ্গল করেন তাই এনার নাম সর্বমঙ্গলা। এই দেবী বর্ধমান তথা সারা বাংলার আরাধ্যা দেবী। দেবী যেহেতু দুর্গা, তাই শারদীয়া উৎসব হচ্ছে প্রধান উৎসব”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 10 =