সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: কাকদ্বীপ :: সুন্দরবনের উপকূলে তীরবর্তী এলাকা নদী ও সমুদ্রের বাঁধ ভেঙে ও উপচে নোনা জলে প্লাবিত হয়েছিল বিঘের এরপর বিঘে চাষের জমি। নোনা জল ঢুকে কার্যত নষ্ট করে দিয়েছে মিষ্টি জলের মাছ ও চিংড়ি চাষের পুকুর ও ভেড়ি। ফলে একের পর এক পুকুর ও ভেড়িতে মাছ চিংড়ি মরে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল সুন্দরবনের বড় অংশের মানুষ মৎস্য চাষী ।
এবার সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলো আইসিএআর এর অধীন কেন্দ্রীয় নোনা জল জীব পালন অনুসন্ধান সংস্থার (সিআইবিএ) কাকদ্বীপ গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা।।গবেষণা কেন্দ্রে সুন্দরবন এলাকায় ভেনামি চিংড়ি চাষীদের নিয়ে একটি আলোচনা ও প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়।
কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমার প্রায় দুশো চিংড়ি চাষী এদিন উপস্থিত ছিলেন। মৎস্য বিজ্ঞানীদের কর্মকাণ্ড দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরাও। এদিন মূলত কিভাবে কম খরচে পরিবেশ বান্ধব এবং দীর্ঘস্থায়ী ভেনামি চিংড়ি চাষ করা যায়, সেটা গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা আলোচনার মাধ্যমে চিংড়ি চাষীদের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
বৈজ্ঞানিক মাধ্যমে এই চিংড়ি চাষে স্বল্প মূল্যের খাবার ব্যবহারের উপর জোর দেন মৎস্য বিজ্ঞানীরা। কারণ, চিংড়ি চাষের ক্ষেত্রে মূল খরচ খাবারে ব্যয় হয়ে যায়। খাবারের খরচ কম হলে চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বিজ্ঞানী দেবাশিস দে জানান, ‘একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের তছনছ হয়ে গিয়েছে উপকূল তীরবর্তী এলাকার বিভিন্ন অংশ ।
ইয়াসে সুন্দরবনের উপকূল এলাকার চিংড়ি চাষিদের ক্ষতির কথা মাথায় রেখে সর্ষের খোল দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে আমাদের গবেষণাগারে ভেনামি চিংড়ির খাবার তৈরি করতে পেরেছি। আগামী দিনে মৎস্যজীবীরা ভেনামি চিংড়ি চাষ করলে এই খাবার খুব কম দামে নিয়ে তারা লাভবান হতে পারবে।
‘ সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয় সুন্দরবনের অধিকাংশ মৎস্য চাষীদের ক্ষতির মুখে, ‘সুন্দরবনের নোনা জলে এই চিংড়ি চাষ খুবই লাভজনক। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ খুবই জরুরী।’ এক চাষি অপূর্ব দাস বলেন কাকদ্বীপে মৎস্য বিজ্ঞানীদের আলোচনা ও প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দিয়েছিলাম। ওদের মুখ থেকে যা শুনলাম ও দেখলাম তাতে করে বিজ্ঞানীদের গবেষণাগারে তৈরি চিংড়ির খাবার খুব কম দামে কিনে বিজ্ঞান ভিত্তিতে চাষ করলে আমরা লাভবান হতে পারব।