সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: ডায়মন্ডহারবার :: সোমবার ২৬,ফেব্রুয়ারি :: সব প্রেমের গল্পই মধুর পরিণতি পায় না কিছু কিছু প্রেমের গল্প অঝরেই ঝরে যায়। গল্পটা শুরু হয়েছিল ৬ মাস আগে ডায়মন্ড হারবার থানা পাতড়া এলাকার আগ্নেশ্বরের বাসিন্দা পবিত্র পাইক (২১) সাথে সোশ্যাল মিডিয়াতে আলাপ হয় নিশা সরদার নামে একটি মেয়ের। এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপের পর শুরু হয়। দুজনের প্রেম কাহিনী ।
এরপর নিশা নানান আবদার একটু একটু করে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছিল। পবিত্র ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। কোন সময় পাঁচশো আবার কোন সময় দুই হাজার একটু একটু করে প্রেমের প্রতারণার গুনে পবিত্র অ্যাকাউন্ট খালি করতে শুরু করে নিশা। পবিত্র পেশায় দিনমজুর। দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে বাবা-মায়ের ছোট সন্তান ছিল পবিত্র।
বাবা প্রতিবন্ধী তাই ছোটবেলা থেকে সংসারের হাল ধরতে দুই ভাই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করতো। কিন্তু প্রেমের রঙিন স্বপ্নে বুধ হয়ে ডুবে গিয়েছিল পবিত্র। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পার্সোনাল ফোন নাম্বার আদান প্রদানে করা হয়। বেশ কয়েকবার পবিত্র নিশাকে বলে তার সঙ্গে দেখা করতে নিশা, রাজিও হয় দেখা করার জন্য এর জন্য পবিত্র কাছ থেকে মোটা অংকের টাকাও হাতায় নিশা।
কিন্তু দেখা করে না নানান অজুহাতে পবিত্রর সঙ্গে দেখা করা এড়াতে থাকে নিশা। নিশা নামের এটি একটি ফেক অ্যাকাউন্ট সেটা জানতে পারে পবিত্রর একজন প্রতিবেশী। সেই মতন পবিত্রকে সাবধান ও করে ওই প্রতিবেশী কিন্তু অনেক তখন দেরী হয়ে গিয়েছে ।
পবিত্র নিশার ভালোবাসার প্রেমের জালে জড়িয়ে পড়েছে। এইরকম ভাবেই চলছিল বেশ কয়েক মাস কিন্তু ছন্দপতন হলো রবিবার। নিশা পবিত্রর কাছ থেকে কুড়ি হাজার টাকা চেয়ে বসে কিন্তু দিনমজুর পরিবারের ছেলে পবিত্র টাকা যোগান দিতে অপারগ হওয়াতে নিশার সঙ্গে পবিত্রর ঝামেলা শুরু হয় ।
এরপর নিশা পবিত্রর ফোন ব্লক করে দেয়। এরপর অসহায় পবিত্র বেছে নেয় নির্মম পথ। নিশাকে বারবার ফোন করলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায়। রবিবার বিকেলে নিশাকে একটি হোয়াটসঅ্যাপে সমস্ত ঘটনার বর্ণনা দিয়ে একটি ভয়েস মেসেজ পাঠায় পবিত্র।
এরপর গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয় পবিত্র। স্থানীয়রা ও পরিবারের সদস্যরা পবিত্র ঘরের দরজা ভেঙে পবিত্র ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে ডায়মন্ডহারবার জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসক পবিত্রকে মৃত বলে ঘোষণা করে।