নিউজ ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: কর্নাটক :: ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাস ডিপোর সামনে ফলের ঝুড়ি নিয়ে বসেন। বিভিন্ন গন্তব্যের মানুষ আসা-যাওয়ার মাঝে তার কাছ থেকে ফল কিনে নিয়ে যান। হাসিমুখে ক্রেতাদের সেই ফল বিক্রি করেন। একবার এক বিদেশি ক্রেতা ইংরেজিতে তার কাছে ফলের দাম জানতে চেয়েছিলেন। কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি। ফলে ফল বিক্রি করতে পারেননি। এই যন্ত্রণা থেকেই পরবর্তীকালে তিনি নিজের এলাকার দুঃস্থ ছেলেমেয়েদের জন্য স্কুল খোলেন। সেই কাজের জন্য ২০২০ সালে পদ্মশ্রী সম্মান পান তিনি।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, পদ্মশ্রী সম্মানপ্রাপ্ত হিসাবে তার নাম ঘোষিত হলেও করোনার কারণে এত দিন তিনি সেই সম্মাননা হাতে পাননি। সোমবার ভারতের রাষ্ট্রপতির হাত থেকে এই সম্মান গ্রহণ করেন তিনি। ফল বিক্রেতার নাম হরেকলা হজব্বা। তার জন্ম কর্নাটকের মেঙ্গালুরুতেই। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি ফল বিক্রি করে আসছেন মেঙ্গালুরু বাস ডিপোর সামনে। এখন তার বয়স ৬৬ বছর।
হরেকলা কন্নড় ছাড়া আর কোনো ভাষাই তিনি বুঝতে বা বলতে পারেন না। ওই ঘটনার পর তাই তিনি এলাকার সমস্ত পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার অঙ্গীকার নেন। তার গ্রামেই একটি স্কুল খুলে ফেলেন। একটি স্কুলের জন্য কী কী প্রয়োজন সে সব কিছুই জানতেন না হরেকলা। সমস্ত খোঁজ-খবর নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে দেখা করেন। ওই সংসদ সদস্যের দেওয়া তহবিল এবং নিজের জমানো পুঁজি মিলিয়ে ২০০০ সালে স্কুল খুলে ফেলেন তিনি।
২৮ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে স্কুল শুরু করেছিলেন তিনি। এখন দশম শ্রেণি পর্যন্ত সেই স্কুলে ছাত্র সংখ্যা ১৭৫। পদ্মশ্রী সম্মানের সমস্ত টাকাও স্কুলের উন্নয়নে দান করতে চান হরেকলা। তার স্বপ্ন এলাকায় আরও অনেক স্কুল খোলার। একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির জন্য কলেজ চালু করার আর্জি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।
হরেকলা বলেন, বহু মানুষ তাকে স্কুলের জন্য অনুদান দেন। সেই টাকা এবং নিজের জমানো পুঁজি দিয়ে একটি জমি কেনার পরিকল্পনা করছেন। সেই জমিতে একটি কলেজ বানাতে চান তিনি।