সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: সোনারপুর :: স্ত্রী স্মার্ট ফোন কেনায় সন্দেহের বসে ভাড়াটে খুনী দিয়ে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টা। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার মধ্যরাতে নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুর পেয়ারাবাগানে। ঘটনায় গ্রেফতার স্বামী রাজেশ ঝা ও ভাড়া করে আনা এক দুষ্কৃতী। পলাতক এখনও এক।
এই ঘটনায় আক্রান্ত স্ত্রীর বক্তব্য এদিন অনেক রাতে তার স্বামী রোজকার মত ঘরে ঢোকে, এরপর তার স্ত্রীর কাছ থেকে চাবি নিয়ে এদিন তিনি নিজেই গেটের তালা লাগাতে যান।
গেটে তালা লাগাতে দেরি হচ্ছে দেখে গৃহবধূ দেখতে গেলে হঠাৎ করে এক জন দুষ্কৃতী তার মুখ চেপে ধরে। অপর আরেক দুষ্কৃতী ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার দিকে তেড়ে আসেন। সে চিৎকার করতে থাকলে তাকে খাটে শুইয়ে তার গলায় ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয়। তখন গৃহবধুর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে।
ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুই দুষ্কৃতী ও তার স্বামী। তবে স্থানীয় মানুষজন এর তৎপরতায় একজন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে তারা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ও তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় খড়দহ থেকে আসা লোকাল ট্রেনের টিকিট।
গৃহবধূর অভিযোগ তাদের দুজনেরই মুখ ঢাকা অবস্থায় ছিল। এরপর স্থানীয় লোকজন ওই গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। তার গলায় সাতটি সেলাই পড়ে। এরপর খবর দেওয়া হয় নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশকে। পুলিশ এসে পাকড়াও হওয়া এক দুষ্কৃতী ও স্বামীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
এই গৃহবধূর আরও অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো তার স্বামী রাজেশ ঝা। কিন্তু সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে সবকিছু মেনে নিতেন তিনি। এমনকি পাড়া প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলতে দিত না তার স্বামী। মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারতো না ওই গৃহবধূ।
এই করোনা আবহে স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ায়” স্বামীর কাছে তার সন্তানদের অনলাইনে পড়াশোনার জন্য একটি স্মার্টফোন কিনে দেওয়ার কথা বলেন। স্বামী ফোন কিনে না দেওযায় নিজের জমানো টাকা থেকেই স্মার্ট ফোন কেনেন রুপা ঝা।
কিন্তু স্বামীর কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেন ফোন। স্বামী বাড়ি থেকে কাজে বের হলে তারপরেই ফোন ব্যবহার করতেন। কিন্তু স্বামী স্ত্রীকে ফোন ব্যবহার করতে দেখে ফেলেন তারপরেই এই খুনের চেষ্টা বলে অভিযোগ। তবে এখনও পলাতক রয়েছে আরও এক দুষ্কৃতী। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। স্বামী রাজেশ ঝাঁ ও এক দুষ্কৃতী কে আজ বারুইপুর আদালতে তোলা হবে। কি কারণে এই খুনের চেষ্টা, তার তদন্ত শুরু করেছে নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ।