নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: শনিবার ১,নভেম্বর :: একই রোগীর একই রোগে দু’রকম রিপোর্ট। ‘স্বাভাবিক’ রিপোর্ট মুহূর্তেই হয়ে গেল ‘অস্বাভাবিক’। কাঠগড়ায় বর্ধমানের খোসবাগানের দুই নামী ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ব্যাপক শোরগোল শুক্রবার দুই সেন্টারের ইইজি রিপোর্ট নিয়ে।
অভিযোগ গেল জেলাশাসক থেকে শুরু করে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে। শুরু হয়েছে তদন্ত। সাম্প্রতিককালে হুগলি, বর্ধমান-সহ বাংলার একটা বড় অংশের মানুষের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বড় ভরসার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে এই খোসবাগান। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা।

জেলাশাসক আয়েষা রানি
সেখানেই ওই অভিযোগ শোরগোল স্বাস্থ্য মহলের অন্দরে। ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে সরব রোগীর পরিবারের সদস্য়রা।
কালনার রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন। তাঁরই ভাইঝি সোহানা ইয়াসমিন (২৩) দীর্ঘদিন ধরে স্নায়ুরোগে ভুগছেন। কলকাতার মল্লিকবাজারের এক বিখ্যাত হাসপাতালে চলছে চিকিৎসা।
চিকিৎসকের নির্দেশেই হয় ইইজি(EEG)। বর্ধমানের খোসবাগানের রামকৃষ্ণ রোডের এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রথমে তা হয়। রিপোর্ট বলছে ‘স্বাভাবিক’।
সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে চলে চিকিৎসা। কিন্তু রোগীর কোনও উন্নতি হয়নি। এরইমধ্যে চিকিৎসকের নির্দেশে ফের হয় ইইজি। সেটা হয় খোসবাগানের আরবি ঘোষ রোডের অন্য একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
সেখানেও একই রিপোর্ট। কিন্তু এটি দেখে চিকিৎসক সাফ জানিয়ে দেন এর কোনও ভিত্তিই নেই। অভিযোগ, রেখাচিত্র বা গ্রাফ না দেখেই ইচ্ছেমতো রিপোর্ট তৈরি করে ফেলা হয়েছে।
মোয়াজ্জেম হোসেন বলছেন, “একটা রিপোর্ট হয়েছিল ২৫ ফেব্রুয়ারি, পরেরটা ১৬ অক্টোবর। দুই সেন্টারেই যোগাযোগ করি। রামকৃষ্ণ রোডের সেন্টার বিনামূল্যে নতুন রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
অন্যদিকে আরবি ঘোষ রোডের সেন্টারের দুই কর্মী আমাদের বাড়িতে আসেন। নতুন রিপোর্ট দেন। সেখানে আবার লেখা অস্বাভাবিক। এদিকে পুরনো গ্রাফ ব্যবহার করেই নতুন রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে শোরগোল শুরু হতেই জেলাশাসক আয়েষা রানি জানাচ্ছেন সিএমওএইচ-কে সরেজমিন পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য দফতরও তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বলে খবর।
অন্যদিকে আর বি ঘোষ রোডের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মীরা বলছেন, চিকিৎসক গ্রাফ দেখেন তাই তাঁরা মন্তব্য করবেন না। চিকিৎসক বলছেন ভুল হয়েছিল, পরে সেটা বুঝে সংশোধন করা হয়েছে।

