সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ ::সাগর :: সোমবার ৫,জুন :: সাম্প্রতিক কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের টালবাহানায় ১০০ দিনের কাজ হারিয়েছিলেন সাগরের স্বপন প্রামাণিক। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবারে নেমে এসেছিল আর্থিক অনটন। পরিবারের মুখে হাঁসি ফোটাতে ভিন্ রাজ্যে কাজের সন্ধানে পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন স্বপন প্রামানিক। কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হলো না স্বপনের ।
উড়িষ্যার বলেশ্বরের মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল তাঁর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, জব কার্ডে ১০০ দিনের কাজ হারিয়ে অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছিলেন স্বপন বাবু ।অগত্যা কেরালায় কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন । সেই মতো ওখানে খোঁজ খবর করে কাজের সন্ধানও করে ফেলেছিলেন । কথা ছিল কেরালায় কাজ করে টাকা পাঠাবেন পরিবারের কাছে ।
আর তাতে স্বচ্ছলতা ফিরবে পরিবারে । দুই ছেলেকে নিয়ে সুখে সংসার করবেন তারা । কিন্তু আর বাড়ি ফেরা হলোনা গঙ্গাসাগরের বেগুয়াখালীর বাসিন্দা স্বপন বাবুর ।বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিল তার। ভরা সংসার রেখে পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে । এক চিলতে মাটির ঘরেই দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে অভাবের সংসার ছিল তাঁর । দুই ছেলে শুভদ্বীপ ও সুমন দুজনেই নাবালক ।
লোকের জমিতে চাষ করেই সংসার চালাতেন স্বপন বাবু । কিন্তু এইভাবে কি সংসার চলে । ১০০ দিনের কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । তাই ইচ্ছে না থাকলেও অভাব অনটন দূর করে ছেলেদের মুখে হাসি ফোটাতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেরালায় কাজে যাবেন। ট্রেন দুর্ঘটনার পর প্রথমে নিখোঁজ থাকলেও রবিবার সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে তাঁর মৃত্যু সংবাদ এসে পৌঁছায় ।
আর তার পর থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। কিভাবে আগামী দিনে দুই ছেলেকে নিয়ে জীবন সংগ্রামের পথে এগিয়ে যাবেন তা নিয়েই এখন চিন্তিত মৃতের পরিবার । এই খবর আসার পর স্থানীয় বিধায়ক তথা সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা ওই পরিবারের সাথে দেখা করেন । সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি আগামী দিনে ওই পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন ।