নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কালনা :: বুধবার ১৯,মার্চ :: ৮০ বছর ধরে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছিলো বড়ঘড়ি । গ্রামের মানুষের খুব প্ৰিয় ছিলো এই ঘড়ি । ৮০ বছর ধরে টিক টিক করে সময়ের সঙ্গে তালমিলিয়ে চলা ঘড়ি আজ ক্লান্ত, মাস আটেক ধরে হাতে হাতে মোবাইল থাকার পরেও সময় যেন থমকে গিয়েছে কালনা ২ নম্বর ব্লকের ওই গ্রাম।
বড় ঘড়ির কাঁটা আর ঘুরছে না।দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে এ গ্রামের ছেলে অর্ধেন্দুশেখর ঘোষ ছিলেন আলিপুর সেন্ট্রাল জেলের সুপার। গ্রামে কারও কাছে ঘড়ি ছিল না সেই সময়। তাদের ঘড়ি দেখা শেখাতে ইংল্যান্ড থেকে ওয়েস্ট এন্ড ওয়াচ কোম্পানির একটি বিশেষ ঘড়ি নিয়ে আসেন অর্ধেন্দু। ঘড়ির কাঁটায় খোদাই করা ছিল তাঁর নামের আদ্যাক্ষর।
নিজের বাড়ির ৩০ ফুট উঁচু কার্নিশে ঘড়িটিকে বসান তিনি। তিনমুখো ঘড়িটির বাইরের দিকে দু’টি মুখ। যাতে রাস্তার দু’ধার থেকে আসা মানুষই তা দেখতে পান। আর একটি অংশ রয়েছে বাড়ির ভিতরে। যেটা দেখতে পারেন পরিবারের লোকজনেরা। বাড়ির ভিতরে দশ ফুট লম্বা কাঠের বাক্সের মধ্যে পেন্ডুলাম-সহ ঘড়িটি রয়েছে।
চাবি দিলে একটি ওজন উপর দিকে উঠতে থাকে। দম কমলে ওজন নেমে আসে। তখন আবার চাবি দিলেই চলতে থাকে ঘড়ি। তবে মাস আটেক ধরে চাবি ঘোরালেও ঘড়ি চলছে না।
‘‘১৯৪০ সালের পরে ঘড়িটি লাগানো হয়। ঘড়িটি সেই থেকে এতদিন পর্যন্ত এক ভাবে চলছিলো, গ্রামের পথ চলতি মানুষ এখন অসুবিধার মধ্যে পড়েছে, গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ অকালপৌষর বড় ঘড়ির উপর নির্ভর করে নিজেদের গন্তব্য স্থলে যাতায়াত করত।
ঘরটি বন্ধ থাকায় গ্রামের মানুষ অসুবিধার মধ্যে পড়েছে, গ্রামের মানুষ চাইছে ঘড়িটিকে যেনো ঠিক করার ব্যাবস্থা করা হয়,
যে বাড়িতে ঘড়িটি রয়েছে সেই পরিবারের সদস্য প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মাঝে এক দিন চাবি দেওয়ার পরে ঘণ্টা দুয়েক চলেছিল ঘড়িটি। আর চলছে না। মিস্ত্রির খোঁজও মিলছে না।’’ তাঁর দাবি, রাজ্যে এমন ঘড়ি আর কোথাও নেই।
বড় ঘড়ির কাছাকাছি অকালপৌষ পঞ্চায়েত। সেখানকার প্রধান শ্যামল গড়াই এলাকারই ছেলে। তিনি বলেন, ‘‘বড় ঘড়ি অকালপৌষকে পরিচিতি দিয়েছে। ঐতিহ্যের কথা ভেবে পঞ্চায়েত বড় ঘড়ি সারাতে চায়। বাড়ির মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’’