গঙ্গাসাগরের তৈরি করা হয়েছে একটি মিউজিয়াম, এই মিউজিয়ামে পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর মেলার সময় এসে গঙ্গাসাগর সম্পর্কে সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় জানতে পারবে।

সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: গঙ্গাসাগর :: “বিশ্বাস ও ভক্তির মেলবন্ধন “গঙ্গাসাগর মেলা। রাজ্যে আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ ইতিমধ্যে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতি দিনের পর দিন হয়ে উঠছে উদ্বেগজনক। দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে গঙ্গাসাগর মেলার পক্ষে সায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঙ্গাসাগর মেলা ২০২২ শুভ সূচনা করেন দক্ষিণ 24 পরগনা জেলাশাসক পি. উলগানাথান।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা, সুন্দরবন বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান সীমন্ত মালী, দক্ষিণ ২৪ পরগনার অতিরিক্ত জেলা শাসক মাননীয় শ্রী সিয়াত এন , ইন্ডিয়ান কোস্ট গার্ড কমান্ডার অভিজিত দাসগুপ্ত সহ একাধিক মেলার সঙ্গে যুক্ত থাকা আধিকারিক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে গঙ্গাসাগর মেলার শুভ সূচনা করা হয়। ১০ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই গঙ্গাসাগর মেলা।

করোনা পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যে গঙ্গাসাগরের ভিড় জমিয়েছে কয়েক হাজার পুণ্যার্থী। এই বছর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কোভিড মোকাবিলার ওপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলায় যে সকল পুণ্যার্থীরা আসছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সে সকল পুণ্যার্থীদের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে গঙ্গাসাগরে তৈরি করা হয়েছে সেফ হোম। অন্যদিকে, গঙ্গাসাগর মেলা ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুরে ফেলা হয়েছে।

বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর পর্যন্ত প্রতিটি জায়গায় লাগানো হয়েছে সিসিটিভি। গঙ্গাসাগরে খোলা হয়েছে মেগা কন্ট্রোল রুম। মেলাতে শুভসূচনা করার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক পি. উলগানথান বলেন, এবছর গঙ্গাসাগর মেলা তে বিশেষ চমক রয়েছে পুণ্যার্থীদের জন্য,”সাগর আরতি, মহাস্থান,ধ্যান কেন্দ্র “করা হয়েছে।

বহু বাধা-বিপত্তির পর মাননীয় কলকাতা হাইকোর্ট মেলা করার জন্য অনুমতি দিয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলা কোন দিন বন্ধ হবে না। যেভাবে করোনা মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন পরিকল্পনা নিয়েছে, তা দেখে মনে হয় না কোনো রকম অসুবিধা হবে পুণ্যার্থীদের। গঙ্গাসাগর মেলা কে আমরা ইতিমধ্যেই “ডিজিটাল-মেলা”ঘোষণা করেছি ।

এ বছরে পুণ্যার্থীদের জন্য কোন কিছু খামতি রাখা হয়নি। আমরা এই গঙ্গাসাগর মেলা কে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। ডিজিটাল মাধ্যমে এই মেলাকে আমরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় দেড় কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছি। গঙ্গাসাগরের তৈরি করা হয়েছে একটি মিউজিয়াম, এই মিউজিয়ামে পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগর মেলার সময় এসে গঙ্গাসাগর সম্পর্কে সমস্ত খুঁটিনাটি বিষয় জানতে পারবে।

এই বছর একটি অভিনব উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ,গঙ্গাসাগরের পুণ্য জল “পুণ্য তরী”মাধ্যমে বিভিন্ন জেলায় জেলায় পৌঁছে যাবে, যে সকল পুণ্যার্থীরা গঙ্গাসাগরে আসতে পারছেন না সেই সকল পুণ্যার্থীরা জেলার বিভিন্ন মন্দির থেকে এই পূণ্য জল সংগ্রহ করতে পারবে। এই বছর “ই-স্নান”এখনো পর্যন্ত ৬০ হাজারেরও বেশি বুকিং হয়েছে। গঙ্গাসাগর মেলা এখন আন্তর্জাতিক মানের মেলাতে পরিণত হয়েছে।

ইতিমধ্যেই গঙ্গাসাগরে অনেক কিছু উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ।আগামী দিনে এই রকম কাজ আরও চলবে। মেলা চলাকালীন মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশকে ও গভীর স্বাস্থ্যবিধিকে মানতে হবে” ।যেকোনো জায়গায় একসঙ্গে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ জমায়েত করতে পারবে না”, সকল পুণ্যার্থীদের মানতে হবে সামাজিক দূরত্ব বিধি। গঙ্গাসাগর মেলা কে সুষ্ঠুভাবে সুসম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকেরা ও জেলা প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × one =