সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: পাথর প্রতিমা :: পাথরপ্রতিমার মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল গুজরাটের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে। মৃত সুমিত প্রধান (২৭) গুজরাটের সুরাটে একটি কোম্পানিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন। বুধবার বেলা ১১টা নাগাদ সুমিতের বাড়িতে ফোন করে মৃত্যুর কথা জানায় তাঁর এক সঙ্গী। ছেলে আত্মহত্যা করবে কিছুতেই মানতে রাজি নয় পরিবারের লোকজনেরা।
সুমিতকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তাঁর বাবা ও মা। ছেলের মৃত্যু খবর পাওয়ার পর তড়িঘড়ি এদিন দুপুরে বাবা অরুন প্রধান কয়েকজন আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে গুজরাটের সুরাটেরর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরিবার সূত্রের খবর, পাথরপ্রতিমার গোবিন্দপুরের বাসিন্দা অরুণ প্রধানের একমাত্র ছেলে সুমিত।
বছর সাতেক আগে কলকাতার টালিগঞ্জ থেকে আইটিআই পাশ করে তারাতলার একটি কোম্পানিতে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দিয়েছিলেন। সেখান থেকে পরিচিতদের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তিন বছর আগে গুজরাটের সুরাটের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন।
সেখানে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন বলে বাবা মায়ের কাছে জানিয়েছিলেন সুমিত। পদোন্নতি পেয়ে কয়েকদিনের মধ্যে উড়িষ্যাতে চলে আসার কথা ছিল। এমনকি অনলাইনে বিটেক পরীক্ষা দিয়েছিল সুমিত। প্রায়শই ফোনে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতেন। যা যা করত সবকিছু বাবা মাকে জানাতো সে।
গত সোমবার রাতেও ভিডিও কলে মা এবং বাবার সঙ্গে কথা বলেছিলেন সুমিত। আগামী শুক্রবার কাকার ছেলের বিয়েতে বাড়িতে আসার কথা ছিল। ফেরার জন্য ফ্লাইটের টিকিটও কাটা হয়ে গিয়েছিল বাবা-মাকে জানিয়েছিলেন সুমিত।
তার আগে একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা সহ পরিবারের লোকজনেরা। এদিন কান্নায় ভেঙে পড়ে সুমিতের মা বীনা প্রধান জানান, ‘সুমিতের বন্ধুর পরিচয় দিয়ে এক যুবক বাড়ির ফোনে ফোন করেছিলেন। সেই ছেলের মৃত্যুর খবর দিয়ে জানায়, সুমিত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। যখন তাকে জানতে চাই, ওই যুবক কোথায় ছিলেন ? উত্তরে সে জানিয়েছিল ছুটিতে বাড়িতে গিয়েছিল। আজ সকালে সুরাটের ভাড়া বাড়িতে ফিরে সুমিতকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়।
ওরা সমস্তটাই সাজানো কথা বলছে। পরিকল্পনা করে আমার ছেলেকে খুন করে গলায় ফাঁস লাগিয়ে টাঙিয়ে দিয়ে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। আমরা ছেড়ে কথা বলবো না।’ সুমিতের বাবা অরুণ প্রধান জানান, ‘ছোট থেকে ছেলেটা পড়াশোনায় খুব মেধাবী ছিল। সকলের সঙ্গে খুব সহজেই মিশে যেতে পারতো।
ওর ইচ্ছা ছিল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হবে। শেষমেষ ওর ইচ্ছাই পূরণ হয়েছিল। কারো সঙ্গে ওর কোন শত্রুতা ছিল না। তারপরও কেন এমন পরিণতি হল, বুঝে উঠতে পারছি না ! ঈর্ষা বশত ওর বন্ধুরাই পরিকল্পনা করে খুন করে মিথ্যা গল্প সাজাচ্ছে।’