যুদ্ধ ক্ষেত্র : ইউক্রেন – স্বজনহীন বিয়েটা কোনমতে সেরেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেশের পক্ষে লড়তে যুদ্ধের প্রস্তুতি এই দম্পতির

ব্যুরো নিউজ :: সংবাদ প্রবাহ ::   বিয়ের দিনটা সবাই স্মরণীয় করে রাখতে চান। এদিন ঘটা করে জানানো হবে সবাইকে। নিজ নিজ রীতি অনুযায়ী বাদ্য বাজবে। সেই তালে তালে গান ও নাচ হবে। আলোঝলমল কোনো স্থানে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবেরা আসবেন, বর-কনেকে ঘিরে আনন্দ করবেন। আর বিয়ের পর হবে মধুচন্দ্রিমা। অন্য সবার মতো এমন বিয়ের স্বপ্নই ছিল তাঁদের।

যুদ্ধের মধ্যেই কিয়েভের সেন্ট মাইকেলস মনাস্ট্রিতে গত বৃহস্পতিবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারছেন সিভাতোস্লাভ ফুরসিন ও ইয়ারিনা অ্যারিয়েভা। ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

কিন্তু বিয়েতে তাঁদের বাদ্য বাজেনি। বেজেছে বোমারু বিমানের বিষণ্ন সাইরেন। চারদিকে উৎকণ্ঠা নিয়ে বিয়ে সারতে হয়েছে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সিভাতোস্লাভ ফুরসিন ও ইয়ারিনা অ্যারিয়েভা দম্পতিকে। স্বজনহীন বিয়েটা সেরেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে দেশের পক্ষে লড়তে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হয়েছে এই নবদম্পতিকে।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার হামলা শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তড়িঘড়ি করে বিয়ে করেছেন ফুরসিন ও অ্যারিয়েভা দম্পতি। বিয়ে সেরেই মধুচন্দ্রিমার বদলে তাঁরা দেশের জন্য যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাঁরা স্থানীয় টেরিটরিয়াল ডিফেন্স সেন্টারে (সশস্ত্র বাহিনীর শাখা) যোদ্ধা হিসেবে যোগ দিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৪ বছর বয়সী ফুরসিন একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। আর ২১ বছর বয়সী অ্যারিয়েভা কিয়েভ সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি কর্মকর্তা। ২০১৯ সালে কিয়েভে একটি প্রতিবাদ সমাবেশে গিয়ে তাঁদের দুজনের পরিচয় হয়। পরিচয় পর্ব পেরিয়ে ওই প্রতিবাদ সমাবেশেই তাঁদের প্রেমের শুরু। পরিকল্পনা ছিল, আগামী ৬ মে দিনিপ্রো নদীর পাশে বড় কোনো রেস্টুরেন্টে বিশাল আয়োজন করে তাঁরা বিয়ে করবেন।

কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি তাঁদের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে। কারণ, দেশের জন্য যুদ্ধে তাঁদের যেতেই হবে। সেই যুদ্ধে গিয়ে যদি আর ফিরে আসা না হয়, তাহলে তো তাঁদের প্রেমের পরিণতি বিয়ে পর্যন্ত গড়াবে না।

বিয়ের পরপরই টেরিটরিয়াল ডিফেন্স সেন্টারে সরকার থেকে দেওয়া একে-৪৭ রাইফেল নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফুরসিন ও অ্যারিয়েভা দম্পতি।ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে নেওয়া

এই ভাবনা থেকেই চারদিকে বোমারু বিমানের সাইরেনের মধ্যেই কিয়েভের সেন্ট মাইকেলস মনাস্ট্রিতে গিয়ে গাঁটছড়া বেধে ফেলেছেন। বিয়ে সেরেই স্থানীয় টেরিটরিয়াল ডিফেন্স সেন্টারে যোগ দিয়ে একে-৪৭ অ্যাসাল্ট রাইফেল নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছেন। তাঁরা স্থানীয় টেরিটরিয়াল ডিফেন্স সেন্টারে (সশস্ত্র বাহিনীর শাখা) যোদ্ধা হিসেবে যোগ দিয়েছেন।

“অ্যারিয়েভা  বলেন আমরা দেশকে ভালোবাসি। দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে আমাদের। দেশকে রক্ষা করতে যা করা দরকার, আমরা তা–ই করব।  “

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 4 =