সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: বারুইপুর :: ক্রমশ বাংলার দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়”অশনি”।দক্ষিণ আন্দামান সাগরে তৈরী একটি ঘূর্ণাবর্ত বর্তমানে রয়েছে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে। রবিবার বিকেলেই তা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। রাত থেকেই তা স্থলভাগের দিকে এগোবে। অভিমুখ হতে পারে দক্ষিণ ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূল।মঙ্গলবার সেটি আছড়ে পড়তে পারে উপকূলবর্তী এলাকায়। সোমবার দুপুর থেকে এর ফলে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। দুর্যোগ মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই জোরকদমে চলছে প্রশাসনিক বৈঠক। দুর্যোগ মোকাবিলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। ঘূর্ণিঝড়ের আশংকা আতঙ্কিত সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষেরা। ঘূর্ণিঝড় আসার আগে নিজেদের জমি থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কেটে নিচ্ছে ফসল।
সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জীবন-জীবিকা ও রুজি রুটি নির্ভর করে মাছ ধরা ও চাষ বাসের উপরে। ইতিমধ্যে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য দপ্তর। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের এখন প্রধান জীবিকার উৎস হল চাষবাস। সাধারণত বছরের এই সময় বোরো ধানের চাষ করে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার চাষীরা ।
পাথরপ্রতিমা ব্লকের অচিন্ত্য নগর, হিরন্ম গোপালপুর, গোবর্ধনপুর, সিতারামপুর, লক্ষ্মী জনার্দনপুরের চাষীরা। ধান ছাড়াও এই সমস্ত এলাকায় মানুষেরা তুলো, মুগ ডাল, সূর্যমুখী সহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষ বাস করে ।
অশনির আগাম সতর্কবার্তা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। নিজেদের রুজি-রুটির শেষ সম্বল টুকু বাঁচাতে নাওয়া খাওয়া ভুলে এখন চাষিরা ব্যস্ত নিজের ফসলকে রক্ষা করতে।
হাতে সময় খুব সীমিত রয়েছে যেকোনো মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড় অশনির তান্ডবে নষ্ট হয়ে যাবে ফসল। প্রত্যেক এলাকার মানুষেরা এখন ব্যস্ত নিজেদের জমি থেকে ফসল কেটে বাড়িতে তুলতে। অনেক জায়গায় সময়ের আগেই কেটে নেয়া হচ্ছে ধান। গত দু’বছর করোনা ও একের পর এক বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে।
ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছিল এলাকা মানুষের জনজীবন।এবার সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের পাকা ধানে মই দিতে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় “অশনি”। পাথর প্রতিমার ধানচাষী রবীন্দ্রনাথ নায়েক জানান, কয়েকদিন আগে ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান। আবার ঝড় বৃষ্টির আশঙ্কা। ঝড় বৃষ্টির ফলে নষ্ট হয়ে যাবে বিঘের এরপর বিঘা ধান।
তাই তড়িঘড়ি সময়ের আগে ধান কেটে নেওয়া হচ্ছে। এখনো বহু জমিতে পড়ে রয়েছে ধান। বৃষ্টির জলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অশনি প্রভাব কতটা বাংলায় পড়বে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা পাথরপ্রতিমা দ্বীপের বাসিন্দারা। অশনির আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসীরা।