সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: বারুইপুর :: বুলবুল,আমফান, ইয়াস, একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াল স্মৃতি এখনও টাটকা। ক্ষতচিহ্ন এখনও শুকোয়নি। এরইমধ্যে এবার আবার নতুন করে চোখ রাঙাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’। আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ‘অশনি’ মোকাবিলায় কোমর বেঁধে নেমেছে জেলা প্রশাসন।অশনি আতঙ্কের মধ্যে দুর্যোগ মোকাবিলায় নিয়ে দফায় দফায় প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক সারছেন দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা শাসক পি. উলগানাথন। মঙ্গলবার নামখানা ব্লক সমষ্টি আধিকারিক উন্নয়ন আধিকারিকের দপ্তরে বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক। ঘূর্ণিঝড় অশনি র প্রভাব সরাসরি পড়ছেনা রাজ্যে।কিন্ত অশনির জেরে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সর্তকতা রয়েছে জেলাগুলিতে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি. উলগানাথন জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তত জেলা প্রশাসন , নামখানা ও গোসাবাতে মোতায়েন ২টি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল।থাকছে ২টি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল।একটি থাকছে গঙ্গাসাগরে অপর একটি থাকছে পাথরপ্রতিমাতে।
থাকছে কুইক রেসপন্সের জন্য মোতায়েন ৬টি ডিস্ট্রিক্ট ইমারজেন্সি টিম। তৈরি রাখা হয়েছে ১০৫টি সাইক্লোন শেল্টার। উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষদের উদ্ধারকাজের জন্য তৈরি ৬৪০টি স্কুল। ইতিমধ্যেই নিচু এলাকা থেকে সরানো হয়েছে ৫৪৬০ জন মানুষকে।ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব না পড়লেও উপকূল তীরবর্তী এলাকা গুলোতে বইতে পারে ঝড় হওয়া । ৪০টি গাছ কাটার যন্ত্র, ২০০টি আস্কা আলো, ১৫টি জেসিবি, ৩৫টি নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। মোতায়েন ১০০০ জন সিভিল ডিফেন্স ভলান্টিয়ার। কোস্টগার্ডের মাধ্যমে চলছে সমুদ্র ও নদীতে নজরদারি।
ত্রিপল, চাল, শুকনো খাবার, জামাকাপড়, ওষুধ, গবাদি পশুর খাদ্য মজুত করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা সমস্ত ব্লকে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। মহকুমার শাসক ও জেলা শাসকের অফিস খোলা ২৪ ঘণ্টা।যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। সাগর, কাকদ্বীপ, পাথরপ্রতিমা ও গোসাবায় বসানো হয়েছে ওয়াটার পাউচ মেশিন। প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠানো হয়েছে ২ লাখ জলের বোতল। হাসপাতালগুলিতে অ্যান্টিভেনম ও ওষুধ মজুত করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। একনাগাড়ে মাইকিং চলছে।
প্রশাসন ও পুলিসের উচ্চপর্যায়ের কর্তারা ব্লকে ব্লকে নজরদারি চালাচ্ছেন। নামখানা প্রশাসনিক বৈঠকের পর পর বকখালি ফ্রেজারগঞ্জ নদী বাঁধের পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখেন জেলাশাসক। এর পাশাপাশি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গেও কথা বলেন ও সব রকম বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেয়। ঘূর্ণিঝড় অশনি প্রভাব তেমন ভাবে রাজ্যে না পড়লেও সব রকমের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত জেলা প্রশাসন।