শুয়োরে কালি ঘিরে ভক্তদের উন্মাদনা কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালিতে।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কৃষ্ণনগর :: কালী মানেই রক্ষা কালী,আদ্যাকালী, শ্যামা কালী ও কৃষ্ণকালীই জনমানসে বেশী প্রচলিত। কিন্তু আজ নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালীতে যে কালী পূজার কথা জানা গেল তার উৎপত্তিস্থল পাকিস্তানে। ১৯৪৭ সালের এর সময় হিন্দুস্তান পাকিস্তান দুটি ভাগে বিভক্ত হলে পাকিস্তানের ভেতর পড়ে যায় আদি প্রাচীন সেই কালীপূজা।

সেই পূজার আজ্ঞা বাহকেরা চলে আসে ভারতের নদীয়ার পাবাখালিতে। আর একাত্তরের সময় পাকিস্তান দু’ভাগে বিভক্ত হলে সেই কালীপূজার পীঠস্থান চলে যায় বর্তমান বাংলাদেশের রাজশাহীর ভেতরে। কিন্তু কালের বিবর্তনে ইন্টারনেট সহ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলেও বর্তমান নদীয়ার পাবাখালির সাথে কোন রকম যোগাযোগ নেই বাংলাদেশের সেই ঐতিহাসিক কালী পূজোর পীঠস্থানের।

নদীয়ার ঐতিহাসিক কালী পূজা কে ডাকা হয় তথাকথিত শুয়োরে কালী নামে। কথিত আছে বাংলাদেশে পূজা সম্পন্ন হবার পরেই কৃষ্ণগঞ্জের পাবা খালিতে শুরু হয় এই শুয়োরে কালী দেবীর আরাধনা ।তবে এখানে অনেক প্রশ্ন চিহ্ন থেকে যায়।কোনও রকম যোগাযোগ ছাড়া কিভাবে এই পূজা সম্পন্ন হয় ?এই পুজোর বিষয়ে জানতে পারা যায় পাবাখালির কালীপুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সুফল রায়ের মুখ থেকে। পুজোর ইতিহাস জানলে অনেকেই রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যায়।

বাংলাদেশ যে স্থানে শুয়োরে কালী দেবীর আরাধনা হয় সেখানে কালী মায়ের মূর্তি আকারেই তিনি পূজিত হন। গ্রামের ই একজনের মাথায ভর করেন এবং তিনিই পুজোর আদেশ দেন যে, বাংলাদেশের পুজো শেষ হয়েছে এখানে পুজো শুরু হোক।

এই নিদান পাওয়ার পরেই ৫১ জন পুরুষ চূর্ণী নদী তে গিয়ে ডুব দিয়ে ঘড়া ভর্তি জল নিয়ে আসেন এবং পূর্ববর্তী মানত অনুযায়ী সেই সংখ্যার উপর নির্ভর করে শুয়োরের ছাগ বলির মাধ্যমে এই পূজা সম্পন্ন করা হয়।

পূজা সম্পন্ন হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ সেই প্রসাদ সমান ভাগে ভাগাভাগি করে খান। কেউ এককভাবে সেই প্রসাদ বাড়িতে নিয়ে যান না। টিভি ইন্টারনেটের এই যুগে মানুষ যেখানে চাঁদে পৌঁছে যাচ্ছে প্রযুক্তির মাধ্যমে, সেখানে শুধুমাত্র ধর্মের প্রতি বিশ্বাস রেখে যুগযুগান্তর ধরে এই ভাবেই চলে আসছে নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালির শুয়োরে কালী পূজার রীতি।

জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য ভক্ত তাদের মনস্কামনা পূরণের জন্য কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালীর শুয়োরে কালীর স্থান স্পর্শ করতে ছুটে আসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 4 =