কুমার মাধব :: সংবাদ প্রবাহ :: মালদহ :: এক কথায় যে কোনো পেশাদার খুনির পরিকল্পনা কে হার মানাবে।অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় নিজের স্বামীকে খুনের ছক। যা দেখলে রীতিমত পেশাদার খুনি রাও অবাক হবে যাবে। একজন ১৯ বছরের গ্রাম্য গৃহবধু মাথায় কি ভাবে এল এই পরিকল্পনা?খুনের ছকটা আগের থেকেই করে রেখে ছিলেন সদ্য বিয়ে হওয়া ১৯ বছরের গৃহ বধূ আশমিরা বিবি। কিন্তু তাঁর এই খুনের পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত সফল হয় নি। উল্লেখ্য গত প্রায় দুই মাস আগে মালদহ থানার মহিষবাথানী অঞ্চলের রাহুত গ্রামের আয়াতুল সেখের (২২) মালদহ জেলার ইংরেজ বাজার থানার সাতঘড়িয়া গ্রামের আশমিরা বিবির(১৮) বিবাহ হয়।
আয়াতুল সেখ পেশাগত ভাবে ভিনরাজ্যের শ্রমিক। বিবাহের জন্যে কর্মস্থল থেকে গ্রামে ফিরে আসে। দুই মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়। আয়াতুল জানিয়েছেন, বিয়ের পর স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর এই কদিন ভালো ভাবেই কাটিয়েছেন। মাঝে একদিন স্ত্রী আশমিরা বিবি তাঁকে খুন করার হুমকি দেয়।সেই হুমকি নিয়ে আয়াতুল বিশেষ মাথা ঘামায় নি।আয়াতুল জানালেন সোমবার রাতে ভাতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধপ্রয়োগ করে তাঁকে ভাত খেতে দেয় স্ত্রী আশমিরা। ভাত খেয়ে নিশ্চিন্তে নিজের ঘরে ঘুমোতে চলে যান আয়াতুল।
মাঝরাতে যখন আয়াতুলের ঘুম ভাঙ্গে,তিনি দেখেন তাঁর পা নারকেলের দড়ি দিয়ে বাঁধা। হাত পিছমোড়া করে বাঁধা, সে যেন চিৎকার না করতে পারে তার জন্যে মুখে শক্ত করে কাপড় বাঁধা আছে। আর গলাতে শক্ত নাইলন দড়ি পেঁচিয়ে একটি আলনার সঙ্গে বাঁধা রয়েছে।
আয়াতুল বাঁচার জন্যে ছটফট করতে থাকলেও তাঁর স্ত্রী বাঁচাতে আসে নি। উল্টো মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ক্যামেরা বন্দী করে। এদিকে আয়াতুল বাঁচার জন্যে ছটফট করার সময় শব্দ হয়। পাশের বাড়ির একজনের সেই শব্দ শুনে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
তিনি চিৎকার করে বাড়ির লোকেদের ডাকলে সবাই মিলে আয়াতুলের ঘরে এসে ডাকাডাকি করে দরজাতে ধাক্কাধাক্কি করতেই দরজা খুলে যায়।
আয়াতুলের মা দেখে হাত পা বাঁধা অবস্থায় চৌকির ওপরে তাঁর ছেলে ছটফট করছে। গলাতে দড়ি পেঁচানো। কোনোরকম ভাবে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। ভোরবেলা মালদহ থানাতে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে আশমিরাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। প্রথমে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করতে চায় নি আশমিরা। পরে পুলিশের কাছে স্বীকার করে।
এরপর পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রের খবর মোবাইল ফোন ঘেঁটে আশমিরা এই খুনের ছক রপ্ত করে ছিল। পাশাপাশি সাম্প্রতিক আশমিরা পরকিয়াতেও জড়িয়ে পড়ে ছিলেন। পুলিশকে আশমিরা জানিয়েছে প্রেমিককে খুশি করতেই তিনি এই কান্ড করেছেন।