সুদেষ্ণা মন্ডল :: মালদা :: সংবাদ প্রবাহ :: পুলিশের কীর্তির জন্য অপরাদ না করেই এক ৬৫বছরের বৃদ্ধ মালদা জেলা সংশোধনাগারে বন্দী। ঘটনাটি পুরাতন মালদার যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর গ্রামের। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল গোপাল মাহাতো নাম এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে। সেই মোতাবেক পুরাতন মালদা থানার কর্তব্যরত সিভিক ভলেন্টিয়ার গিয়ে গোপাল মাহাতোকে গ্রেপ্তার করে।
- এরপর আদালতে পেশ করার পর সেই অভিযুক্তকে। আালতের নির্দেশে সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। অভিযোগ, প্রকৃত আসামি গোপাল মাহাতোর বদলে পুলিশ তুলে নিয়ে গেছে যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরগঞ্জ গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ অন্য গোপাল মাহাতোকে। সোমবারের এই ঘটনার পর এখন নাজেহাল হয়ে পড়েছেন অসহায় বৃদ্ধ গোপাল মাহাতোর পরিবার।
- ভোটের পরিচয় পত্র , পঞ্চায়েতের শংসাপত্র সহ বৃদ্ধ বাবার যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে পুরাতন মালদা থানায় হাজির হন ছেলে অশোক মাহাতো । তিনি বলেন, বিনা অপরাধে জেল খাটছে বৃদ্ধ বাবা।
- যে আসল অপরাধী গোপাল মাহাতোকে না ধরে, সোমবার রাতে বাবাকে ধরে নিয়ে এসেছে পুরাতন মালদার কর্তব্যরত কয়েকজন কর্তব্যরত সিভিক ভলেন্টিয়ার। পরে আদালতের মাধ্যমে জানতে পারি অন্য গোপাল মাহাতোর নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।আর পুলিশ অন্যায় ভাবে আমার বৃদ্ধ বাবাকে ধরে নিয়ে এলো। এখন বাবাকে ছাড়ানোর জন্য প্রশাসনে দুয়ারে ঘুরছি। তাই এখন বাধ্য হয়ে মানবাধিকার কমিশন এবং মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানোর চিন্তা ভাবনা করেছেন ওই বৃদ্ধের পরিবার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫ সালের একটি সংঘর্ষ এবং ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছিল পুরাতন মালদা থানার যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্গাপুর এলাকার বাসিন্দা গোপাল মাহাতোর বিরুদ্ধে । দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলার পর জামিনে রয়েছে ওই ব্যক্তি।
এরপর সেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় । দুর্গাপুর গ্রামের সেই গোপাল মাহাতোকে না ধরে গত সোমবার যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরগঞ্জ গ্রামের অপর আরেক গোপাল মাহাতোকে ধরে নিয়ে আসে পুলিশ । আর তারপর থেকে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য।
বৃদ্ধ গোপাল মাহাতোর ছেলে অশোক মাহাতো বলেন, বাবার ৬৫ বছর বয়স হয়েছে। জীবনে কোনদিন কোন ঝুটঝামেলায় জড়ায় নি। অথচ বাড়িতে কয়েকজন সিভিক ভলেন্টিয়ার গিয়ে বাবার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে ধরে নিয়ে এলো। আমরা বারবার বলেছি যে আপনাদের কোথাও ভুল হচ্ছে।
কিন্তু ওরা কোন কথা শোনে নি। বৃদ্ধ বাবাকে রাতে তুলে নিয়ে আসে। এরপর বাবার জেল হয়ে যায় । খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পাশের গ্রাম দুর্গাপুরের আরেক গোপাল মাহাতো রয়েছে। তিনি প্রকৃত অপরাধী । তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত ।
অথচ পুলিশ না বুঝেই আমার বাবাকে ধরে নিয়ে এলো এবং আদালতে পেশ করলো। এখন বাবা সংশোধনাগারে রয়েছেন। এর দায়ভার কে নিবে। আমরা এর বিরুদ্ধে মানবাধিকার কমিশনে যাব। মুখ্যমন্ত্রী কেউ নালিশ জানাব।
এত বড় ভুল কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না । প্রয়োজনে কর্তব্যরত পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে প্রকৃত গোপাল মাহাতোর পরিবার।যদিও এপ্রসঙ্গে পুরাতন মালদা থানার পুলিশ কোন রকম মন্তব্য করে নি।