সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: কাকদ্বীপ :: ইতিমধ্যেই ইলিশের মরশুম শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এবার ভরা আষাঢ়ে জালে উঠছে না ইলিশ। অন্য বছর এই সময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপোলি শস্যে ভরা থাকলেও এ বার ঠিক তার উল্টো ছবি ধরা পড়ছে।
মরশুমেও ইলিশ ধরতে না পারায় বেজায় দুর্দিনে পড়েছেন মৎস্যজীবীরা । ইলিশ ধরতে যে ট্রলারগুলি সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল, কার্যত ইলিশ শূন্য হাতেই ফিরে আসতে হচ্ছে তাদের।
এ বছর কেন এমনটা হচ্ছে, সেটা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না মৎস্যজীবীদের একাংশ। তাঁদের আশা, আষাঢ় পেরিয়ে শ্রাবণে বৃষ্টি বাড়লে হয়তো জালে ভাল ইলিশ ধরা পড়বে।
প্রজনন ঋতুতে মায়ানমারের ভিটে ছেড়ে উজান বেয়ে বঙ্গের নদীতে চলে আসে ইলিশ। তবে ইলিশের আগমন নির্ভর করে নদী ও সমুদ্রের লবণের পরিমাণের উপর।
সমুদ্র বিশেষজ্ঞদের মতে, নদী ও সমুদ্রে লবণের পরিমাণ যত কমবে, ততই মোহনার দিকে এগিয়ে আসবে ইলিশ। তবে এর জন্য সমুদ্রে পূবালি বাতাস থাকাও জরুরি। এ বছর দক্ষিণবঙ্গে তেমন বৃষ্টি না হওয়ায় সমুদ্রের নোনা ভাব কাটেনি। যার ফলে সমুদ্রের উপকূল সংলগ্ন এলাকায় ইলিশের ঝাঁকের দেখা মিলছে না। পশ্চিমবঙ্গের নদীতে ইলিশ তেমন ধরা না পড়লেও বাংলাদেশের নদ-নদীতে এত ইলিশ ঢুকছে কী ভাবে ? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাংলাদেশের নদ-নদীতে নোনা ভাব খানিক কেটে যাওয়ায় বহু ইলিশ ঢুকেছে।
কিন্তু বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও হুগলি নদীতে ইলিশের দেখা নেই। তার কারণ, ওই নদীতে পলি জমতে শুরু করায় ঢোকার সময় বাধা পাচ্ছে ইলিশের ঝাঁক।
এ ছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত ‘ফিশিং’ একটা বড় কারণ বলেই মনে করছেন মৎস্যজীবীরা। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনের অধিক মাছ ধরায় অনেক সময় ওড়িশা উপকূলের দিকে চলে যায় ইলিশ। মৎস্য ব্যবসায়ী শত্রুঘন গিরি বলেন, ইংলিশের মরশুমে এখন বাজার শূন্য। কবে ইলিশ আসে তাও জানিনা।
সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, ইলিশে আদর্শ পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। বৃষ্টি পড়লে সমুদ্রে লবন ভাব কেটে যাবে। মিষ্টি জলে ইলিশ আসবে।
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ও পূবালী বাতাস ইলিশে আদর্শ পরিবেশ। আশা করা যাচ্ছে এবার ইলিশ পাওয়া যাবে। আড়াই থেকে তিন হাজারের বেশি ট্রলার নামানো যাবে না সমুদ্রে। তবেই সাগর আর হুগলি নদীর মোহনায় আবার ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মিলবে।