রাজীব গুপ্তা :: অতিথি সম্পাদক এর কলম ( ২৪ ঘন্টা লাইভ ):: ৪ঠা, জানুয়ারী :: কোলকাতা :: বছরের শুরুতেই ভারতবাসির জন্য সুখবর এসেছে যে করোনা ভাইরাসকে রুখতে একটা নয় একেবারে দু দুটো ভ্যাকসিন প্রস্তুত ।
সম্ভবত মার্চ মাস থেকেই পাওয়া যেতে পারে । তার মধ্যে আবার ভারত বায়োটেকের তৈরী ভ্যাকসিনটি একেবারেই দেশীয় বিজ্ঞানীদের দ্বারা দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী । আসুন দেখে নিয়ে করোনার টিকার কি অবস্থা এই মুহূর্তে ।
করোনাভাইরাসের প্রথম ভারতীয় টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’ হাতে আসতে পারে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি নাগাদ হবে । ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর এক উচ্চপদস্থ বিজ্ঞানীকে উদ্ধৃত করে এমনই দাবি করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। আইসিএমআরের কোভিড টাস্ক ফোর্সের সদস্য-বিজ্ঞানী রজনী কান্ত আজ বলেছেন, ‘‘টিকাটি ভাল কার্যকারিতা দেখিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী বছরের গোড়ার দিকে, ফেব্রুয়ারি বা মার্চে একটা কিছু পাওয়া যাবে।’’ আইসিএমআরের নীতি, গবেষণা-ব্যবস্থাপনা, পরিকল্পনা ও সমন্বয় সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই বিজ্ঞানীর ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গেলে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই বাজারে এসে যাবে ভারতীয় টিকা।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার যৌথ উদ্যোগে তৈরি ‘কোভিশিল্ড’ টিকার চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। ভারতে ওই টিকা উৎপাদন ও পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা আশাবাদী, আগামী বছরের জানুয়ারিতে কোভিশিল্ডের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ হলেই সেটি ভারতে পাওয়া যাবে।
সরকার ইতিমধ্যেই সিরাম ইনস্টিটিউটকে জানিয়েছে, মাসে ৫ থেকে ৬ কোটি করোনার ডোজ প্রয়োজন হবে কেন্দ্রীয় সরকারের। সরকারের কাছে টিকা পিছু দাম ২০০ টাকা হলেও বাজারে টিকা প্রতি খরচ করতে হবে ১ হাজার টাকা।আর ঠিক এখানেই আমাদের প্রশ্ন রয়েছে ।
কিছুদিন আগে বিহারে বিধানসভার নির্বাচনের সময় দেশের শাসকদল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে বিহারের জনতাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে যদি আমরা নির্বাচনে জিতে যাই তাহলে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কিন্তু করোনা ভ্যাকসিন আপনাদের দেবে নির্বাচিত সরকার । আবার এদিকে পশ্চিম বঙ্গেও আগামী এপ্রিল মাসেই বিধানসভার নির্তবাচন হবে বলে কথা আছে ।
এখন এই রাজ্যে উপর্যুপরি দেশের শাসকদলের তাবড় নেতারা এমনকি প্রধান মন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর যাতায়াত বাড়ছে । বইছে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির জোয়ার । এমনকি নিন্দুকেরা বলছেন কোথাও কোথাও নাকি বিভিন্ন দলের বোরো মেজো সেজো নেতারাও বলে বেড়াচ্ছেন যে তাঁদের দোল নির্বাচনে জিতলে এই রাজ্যেও নাকি বিনামূল্যে মারণ রোগের ভ্যাকসিন মিলবে
এখন প্রশ্ন হলো আমাদের দেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল দেশ । আমাদের জনসংখ্যা আনুমানিক প্রায় ১৩৫ কোটির কাছাকাছি । তাহলে যেসব রাজ্যে নির্বাচন আছে সেখানকার জনগণ বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবেন । তাহলে যেসব রাজ্যে এখনই নির্বাচন নেই সেখানকার জনগণ কি বানের জলে ভেসে এসেছেন ? তাঁদের কেন কিনতে হবে মূল্য দিয়ে ? এটাতো সরাসরি গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুন্ন হবার জোগাড় ।
আরও একটি প্রশ্ন উঠছে । সরকার নাকি টিকা পাবেন মাত্র ২০০ টাকায় অথচ জনগণ কিনবেন সেই টিকাই এক হাজার টাকা দিয়ে ? কেন ?সরকারের উচিত এই মুহূর্তে একটি সর্বজনীক বিধি প্রণয়ন করা যা সারাদেশের সাম্যবাদকেই স্বীকৃতি দেবে । আর তা যদি হয় তাহলে ওইসব গদি-পাগল নেতাদের এই মুহূর্তে ভোট ভিক্ষার জন্য জনগণকে এইসব ধোঁকাবাজির কথা বন্ধ করতে হবে বলে জনতার একাংশ দাবি করছেন বলে অভিযোগ ।টিকাও এখনও বাজারে আসেনি আর রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনেরও কিছুটা সময় বাকি আছে । এখনই প্রকৃষ্ট সময় নির্দিষ্ট বিধি ও নীতি প্রণয়নের ।