আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদ প্রবাহ টিভি :: ২২শে জানুয়ারি :: কোলকাতা ::
চোখের জলে সাংবাদিক সন্মেলন ভিজিয়ে দিলেন সদ্য প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় |
মাসখানেকের মধ্যে রাজ্য মন্ত্রিসভা থেকে এই নিয়ে তৃতীয় হেভিওয়েট মন্ত্রী পদত্যাগ করলেন। গতমাসের মাঝামাঝি পদত্যাগ করেছিলেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এমাসেই পদত্যাগ করেছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লা। সেই তালিকায় নাম লেখালেন রাজীবও। শুভেন্দু ইতিমধ্যেই বিজেপিতে যোগদান করেছেন। সম্প্রতি রাজীবকেও নতুন দলে আহ্বান করেছেন তিনি। সম্ভবত দ্রুতই শুভেন্দুর পথ ধরবেন সদ্য পদত্যাগী মন্ত্রীও।
শেষ সংযোজন দল থেকে বহিষ্কার বৈশালী ডালমিয়া
শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই রীতিমতো বেসুরো রাজীব । একাধিকবার প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছেন তিনি। তৃণমূলের অভ্যন্তরে যে তাঁর কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে, তাও জনসমক্ষে বলতে শোনা গিয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রীকে। মন্ত্রিসভার একাধিক বৈঠকেও গরহাজির থেকেছেন তিনি। বনমন্ত্রীর মানভঞ্জনের জন্য স্বয়ং পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে দায়িত্ব দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
আসরে নেমেছিলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও। দলের তরফে তাঁর মানভঞ্জনের চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু সেসব কার্যত কোনও কাজেই এল না। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজীব। এরপর তিনি সশরীরে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ।
বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে অভিমান এবং ক্ষোভে ফেটে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি টিভি ক্যামেরার সামনে কেঁদে ফেলেন । তিনি বলেন বিগত একমাসে তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী তাঁকে অনেক কটূক্তি এবং হেনস্তার মুখোমুখি হতে হয়েছে । তিনি একসময় কাঁদতে কাঁদতে বলেন আমি আর পারছিলাম না ।
তিনি বলেন, আজ নয় আসলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আড়াই বছর আগে। সেইসময় সেচ দফতরের মন্ত্রী ছিলেন রাজীব। এদিন তিনি বলেন, দফতর বদল হতেই পারে, কিন্তু ন্যুনতম সম্মান আশা করেছিলাম। ক্ষোভের সুরে তিনি জানিয়েছেন, সেদিন পার্টি অফিসে বসে কর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে টিভিতে দফতর বদলের খবর জেনেছিলেন তিনি।
তবে একাধিক দফতরে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে দল ছাড়ার বিষয়ে এখনও মুখ খোলেননি তিনি। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এসব বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন। বলেন, আঘাত সহ্য করতে পারিনি। চোখ মুছতে মুছতেই সাংবাদিক বৈঠক ছাড়েন রাজীব।
হাওড়া থেকে পর পর মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন দুই তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে বৈশালী ডালমিয়াকে নিয়েও রয়েছে জল্পনা। এদিন হাওড়ার অপর বিধায়ক বৈশালী বলেন, ‘এত দেখছি এক ক করে সবাই চলে যাচ্ছে, রাজীবদার পিছনে লাগা হচ্ছিল, জ্বালাতন করা হচ্ছিল। ছোট কথা বলা হচ্ছিল।
যাঁরা কাজের মানুষ তাঁদের যদি জ্বালাতন করা হয়, তাহলে কাজ করা অসুবিধা। অনেকেই প্রমাণ ছাড়াই মানুষকে কাদা ছুঁড়ছে। যাঁরা কাদা ছুঁড়ছেন তিনি নিজে কালিমামুক্ত নন। আমি, লক্ষ্মীরতন, রাজীবদা একটা আশা করে এসেছিলাম। আমি ধৈর্য করে আছি। একজন বলছেন যে কিছু যায় আসেনা, তবে যায় আসে।’
বৈশালী বার্তা দেন,মানুষকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। একজনের স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে গোটা দলের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। এভাবে কতদিন চলবে জানিনা। এখনও চেষ্টা করছি। মানুষের কাজ করছি, কতদিন পারব জানিনা ।