আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদ প্রবাহ টিভি :: ২৫শে জানুয়ারি :: কলকাতা ::
‘জয় শ্রীরাম’
শনিবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লক্ষ্য করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান ছিল পূর্ব ‘পরিকল্পিত’ ? অন্তত তেমনটাই মনে করছেন বিজেপি দলের অন্দরের একাংশও । শুধু বিজেপি কেন এমনকি খোদ আরএসএস এর কর্তাদের একাংশও এই ঘটনায় বেশ ক্ষুব্ধ বলেই জানাগেছে ।
ওই দিনের ঘটনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে গোটা দেশে। যে ভাবে মমতা ওই ঘটনার কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তৃতা না দিয়ে পোডিয়াম ছেড়েছেন, তাতে ঘটনাটি ভিন্ন মাত্রায় পৌঁছেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আধঘণ্টারও বেশি সময়ের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ওই ঘটনা নিয়ে কোনও শব্দ ব্যয় করেননি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে প্রচারের হাতিয়ার করাই ছিল রাজ্য বিজেপি-র লক্ষ্য। কিন্তু উল্টে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে অনুষ্ঠানের সেই অংশটি, যেখানে মমতা তাঁর প্রতিবাদ জানিয়ে পোডিয়াম ছাড়ছেন। যদিও তার পর সৌজন্য দেখিয়ে সারাক্ষণই তিনি মঞ্চে বসেছিলেন।
এরপর বিজেপির দলের অন্দরেই খোঁজ খবর শুরু হয়ে যায় আর তাতেই দলের একাংশের মতে পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই ঘটনা পুরোপুরি ভাবেই পূর্ব পরিকল্পিত ।সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল দলের যুবশাখা। সাংসদ সৌমিত্র এবং শঙ্কুদেব পণ্ডাই নাকি একদল কর্মীকে‘ সংগঠিত’ করেছিলেন অনুষ্ঠানে ওই স্লোগান দেওয়ার জন্য। যা না কি জানাই ছিল না রাজ্য নেতৃত্বের ।
সংগঠনের সহ-সভাপতি শঙ্কুদেবের প্রত্যাশিত ভাবেই দাবি, ওই ঘটনা ‘সংগঠিত’ ছিল না। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলায় বা ভারতে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি কি নিষিদ্ধ না কি’’ এটা কি ঠিক যে, সে দিন যুবমোর্চার কর্মীরাই ওই ধ্বনি তুলেছিলেন? রাজ্য বিজেপি-র একাংশ যা বলছে? শঙ্কুদেবের জবাব, ‘‘কে ধ্বনি দিয়েছিল জানি না। কেউ আলাদা করে যুবমোর্চার কথা বলে থাকলে সেটা অপপ্রচার। এর পিছনে কোনও সাংগঠনিক চিন্তাভাবনা ছিল না। আর ‘জয় শ্রীরাম’ বলা তো কোনও পাপ নয় ।’
ওই ঘটনাকে ভাল চোখে দেখছে না রাজ্যের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) নেতৃত্বও। সঙ্ঘের বক্তব্য, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়া অন্যায় নয় ঠিকই। কিন্তু সে দিনের অনুষ্ঠানের যে গুরুত্ব এবং গাম্ভীর্য ছিল, সেখানে কোনও ধ্বনি দেওয়াই কাম্য ছিল না। সঙ্ঘের এক কর্তার দাবি, ‘‘যাঁরা এটা করেছেন, তাঁরা আদতে সংগঠনেরই ক্ষতি করছেন। মানুষের কাছে হিন্দুত্ববাদীদের সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে।’’
এখন দেখার সংঘের এই মনোভাবকে উপেক্ষা করে সামনে অমিত শাহের সফরে এর প্রতিফলন কি দাঁড়ায় তাই দেখার ।