নিউজ ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: ২১শে,এপ্রিল :: প্রতি বছর বৈশাখ মাসের শুক্লপক্ষের তৃতীয়া তিথিতে পালিত হয় অক্ষয় তৃতীয়া। হিন্দুধর্মে অক্ষয় তৃতীয়া একটি পূণ্যতিথি হিসেবে পালন করা হয়। এদিন কোনও শুভ কাজ করলে তার অক্ষয় ফল লাভ করা যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস।
এদিন বিয়ে, উপনয়ন, অন্নপ্রাশন, গৃহপ্রবেশ করা অত্যন্ত শুভ। কেনাকাটা করার জন্যও অক্ষয় তৃতীয়া দিনটি বিশেষ ভাবে শুভ। এদিন কিছু কেনাকাটা করলে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যায় বলে প্রচলিত বিশ্বাস। সেই হিসেবে অক্ষয় তৃতীয়া ধনতেরস ও দীপাবলির মতোই একটি শুভ দিন বলে মনে করা হয়।
পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ায় অনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। জেনে নিন অক্ষয় তৃতীয়া পালন করার পাঁচটি প্রধান কারণ।
নতুন যুগের শুরু
অক্ষয় তৃতীয়া থেকে নতুন যুগের শুরু করা হয়। ভবিষ্যপুরাণ অনুসারে সত্য, ত্রেতা ও কলিযুগের সূচনা হয়। দ্বাপর যুগের অবসান ঘটে অক্ষয় তৃতীয়াতেই। সত্যযুগে নারায়ণ মত্স্য, কূর্ম, বরাহ ও নরসিংহ অবতার রূপে ধরাধামে আসেন। ত্রেতাযুগে তিনি বামন অবতার, পরশুরাম অবতার ও রাম অবতার রূপে জন্ম নেন। অধর্মের বিনাশ করে ধর্মের প্রতিষ্ঠা করতে বারবার অবতার-রূপে পৃথিবীতে এসেছেন বিষ্ণু।
পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়াতেই স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন দেবী গঙ্গা। এদিন থেকে মর্ত্যে প্রবাহিত হতে শুরু করে এই পূণ্যসলিলা নদী। রাজা ভগীরথ তপস্যায় খুশি হয়ে মহাদেবের বরে অক্ষয় তৃতীয়া তিথিতে মর্ত্যে নেমে আসেন গঙ্গা। গঙ্গার জলে স্নান করলে গত সাত জন্মের পাপ ধুয়ে যায় বলে মনে করা হয়।
বদ্রীনারায়ণ ও বাঁকে বিহারীর দর্শন
এদিন থেকেই খুলে যায় চারধামের অন্যতম বদ্রীনাথ মন্দিরের দরজা। তার সঙ্গে এদিনই মথুরায় বাঁকে বিহারীর দর্শন পাওয়া যায়। সারা বছর পোশাকের আড়ালে ঢাকা থাকেন বাঁকে বিহারী। তাঁর চরণ দর্শন করতে পারলে মৃত্যুর পর স্বর্গে স্থান হয় বলে প্রচলিত বিশ্বাস।
অক্ষয় পাত্র লাভ
পুরাণ মতে দেবী অন্নপূর্ণার কাছেই এই পৃথিবীর সমস্ত খাদ্য রয়েছে। এদিন খাদ্য দান করলে কোনও খাবারের অভাব হয় না বলে প্রচলিত বিশ্বাস। পুরাণ অনুসারে অক্ষয় তৃতীয়ায় অক্ষয় পাত্র লাভ করেছিলেন যুধিষ্ঠির। এই কারণে অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই ক্ষেতে বীজ রোপণ করা শুরু করেন কৃষকরা।
মহাভারত রচনার শুরু
মহাভারতকে বলা হয় পঞ্চম বেদ। অক্ষয় তৃতীয়া থেকেই মহর্ষি বেদব্যাস মহাভারত রচনা শুরু করেন। মহাভারতের মধ্যেই রয়েছে শ্রীমদ ভগবত্ গীতা। বলা হয়ে থাকে, গীতার অষ্টদশ অধ্যায় যিনি পাঠ করেন, তাঁকে কোনও দুঃখ কষ্ট স্পর্শ করতে পারে না।
পরশুরামের জন্ম
অক্ষয় তৃতীয়াতেই জন্ম হয় বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরামের। এদিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে পুজো পাঠ করলে তাঁদের আশীর্বাদ লাভ করা যায়।(সংগৃহীত)