পালন তো করেন, জানেন অক্ষয় তৃতীয়ার মাহাত্ম্য?

নিউজ ডেস্ক :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: ২১শে,এপ্রিল :: শুভ বিষ্যপুরাণে এক অহংকারী ব্রাহ্মণের কাহিনি। ব্রাহ্মণ কাউকে কোনওভাবে সাহায্য করেন না। একদিন ক্ষুৎপিপাসায় কাতর এক ব্যক্তি ব্রাহ্মণের কাছে জল চাইলে তৎক্ষণাৎ ওই ব্রাহ্মণ তার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেন।

তারপর বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে বললেন যে, তাঁর ঘরে খাবার-দাবার, জল দেওয়ার মতো কিছুই নেই। ব্রাহ্মণ-পত্নী দয়াবতী। তিনি স্বামীর নিষেধ অমান্য করে তৃষ্ণার্ত ব্যক্তিটিকে অন্ন ও জলদান করলেন।শুভ বিষ্যপুরাণে এক অহংকারী ব্রাহ্মণের কাহিনি। ব্রাহ্মণ কাউকে কোনওভাবে সাহায্য করেন না।

একদিন ক্ষুৎপিপাসায় কাতর এক ব্যক্তি ব্রাহ্মণের কাছে জল চাইলে তৎক্ষণাৎ ওই ব্রাহ্মণ তার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেন। তারপর বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে বললেন যে, তাঁর ঘরে খাবার-দাবার, জল দেওয়ার মতো কিছুই নেই। ব্রাহ্মণ-পত্নী দয়াবতী। তিনি স্বামীর নিষেধ অমান্য করে তৃষ্ণার্ত ব্যক্তিটিকে অন্ন ও জলদান করলেন।

মৃত্যুর পর ব্রাহ্মণের বিদেহী আত্মার ঠাঁই হল যমলোকে। সেখানে অন্ন-জল বিনা নিদারুণ কষ্টে দিন কাটে আত্মার। অবশেষে পত্নীর পুণ্যকর্মে একসময় যমলোক থেকে মুক্তি পেল আত্মা। ব্রাহ্মণ পুনর্জন্মলাভ করলেন। এই জন্মে অক্ষয় তৃতীয়ার ব্রত ভক্তিভরে পালন করে যশস্বী হলেন ব্রাহ্মণ। বিগত জন্মের পাপস্ক্ষালন হল তাঁর নবজন্মের অন্ন ও জলদানের মতো পুণ্য কর্মে।

সত্যযুগের শুরু অক্ষয় তৃতীয়ায়। কৃষিপ্রধান দেশ ভারতবর্ষে অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটিতে ধরিত্রীদেবীর পুজো অনেক জায়গাতেই উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করা হয়। অক্ষয় তৃতীয়ার অক্ষয় মাহাত্ম্য। দ্বাপর যুগের কথা। বাল্যসখা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে বৃন্দাবন থেকে সুদূর দ্বারকায় এলেন সুদামা।

দরিদ্র ব্রাহ্মণ প্রিয়তম সখার জন্য কাপড়ের পুটুলিতে বেঁধে এনেছেন তিনমুঠো তণ্ডুল। সেই তণ্ডুল পরম তৃপ্তিতে গ্রহণ করলেন অন্তর্যামী কৃষ্ণ। সুদামা তাঁর দারিদ্রের কথা বলতে পারলেন না। কৃষ্ণের অজানা কিছু নয়। সুদামা ফিরে এলেন বৃন্দাবনে। কিন্তু একী! কোথায় তাঁর পর্ণকুটির! সেখানে যে এক সুরম্য বাসগৃহ। আর সেই বাসগৃহে রয়েছেন স্ত্রী বসুন্ধরা ও সন্তানরা। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী অক্ষয় তৃতীয়ার দিনটিতেই সুদামার দারিদ্র‌ দূর করে তাঁকে উপহারস্বরূপ অঢেল সম্পদ দান করেন কৃষ্ণ।

অক্ষয়’ শব্দের অর্থ যার কোনও ক্ষয় নেই। জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী এই তৃতীয়া তিথি ক্ষয়হীন। অর্থাৎ যার ফল কখনও নষ্ট হয় না। তাই এমনই দিনে দান ও স্নানের (বিশেষ করে গঙ্গাস্নান) মাহাত্ম্য অসীম। যে কোনও শুভ কাজের আদর্শ দিন অক্ষয় তৃতীয়া। হাজার-হাজার বছর ধরে এই দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।

এদিন পুজোপার্বণ, যজ্ঞ, য‘পতপ সমস্ত কর্মের ফল অনন্ত ও অক্ষয় হয়। জাতিধর্ম নির্বিশেষে জলদান ও অন্নদান অক্ষয় তৃতীয়ার অন্যতম অঙ্গীকার। শাস্ত্র অনুযায়ী অক্ষয় তৃতীয়া যদি সোমবার অথবা বুধবার হয় এবং এর সঙ্গে রোহিণী নক্ষত্র যুক্ত হলে সেই অক্ষয় তৃতীয়া তিথি শ্রেষ্ঠ বলে বিবেচিত হয়।

অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সূর্য মেষ রাশিতে এবং চন্দ্র বৃষ রাশিতে থাকে। সূর্য, চন্দ্র ও বৃহস্পতি একজোট হয়ে চলে।
অক্ষয় তৃতীয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য শুরুর আলাদা গুরুত্ব ক্রেতা ও বিক্রেতার সম্পর্ক স্থাপন। হালখাতা যাঁরা নতুন কিছু শুরু করতে চান অক্ষয় তৃতীয়ার থেকে শুভ দিন কিছু নয়। এদিন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিদ্ধিদাতা গণেশ ও ধন-সম্পদের দেবী মা লক্ষ্মীর পুজো অত্যন্ত ভক্তিভরে করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × three =