BREAKING NEWS :: সব ফ্লাইট বন্ধ করে দিল মিয়ানমার – অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান – আহ্বান সুচির

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদপ্রবাহ টিভি :: ১,ফেব্রুয়ারি :: নয়াদিল্লি ::

মিয়ানমারের সব বিমানবন্দর বন্ধ

 

মিয়ানমারের সব যাত্রীবাহী ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমান চলাচলের দায়িত্বে থাকা দেশটির সরকারি সংস্থা। মিয়ানমারে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস তাদের ফেসবুক পেইজে জানায়, দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার রাস্তা সোমবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।দূতাবাস টুইটারে জানায়, সংবাদগুলো ইঙ্গিত দেয় যে মিয়ানমারের সব বিমানবন্দর বন্ধ রয়েছে।

মার্কিন দূতাবাস `নিরাপত্তা সতর্কতা’ জারি করে বলেছে যে তারা মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র আটকের পাশাপাশি ইয়াঙ্গুনসহ বেশ কয়েকটি শহরে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার বিষয়ে অবগত রয়েছে।মিয়ানমারের পূর্বের নাম ব্যবহার করে তারা আরো জানায়, ‘বার্মায় রাজনৈতিক অস্থিরতার সম্ভাবনা রয়েছে এবং আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাব।’

দেশের নিয়ন্ত্রণ নেয়া মিয়ানমার সেনাবাহিনী সোমবার জানিয়েছে, এক বছরের জরুরি অবস্থা শেষ হওয়ার পর দেশটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নতুন সরকারের হাতে ফিরিয়ে দেবে।

স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট ইউ উইন মিন্ট এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সামরিক বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়।মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থা চলাকালীন ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনকে সংস্কার করা হবে এবং গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন পর্যালোচনা করা হবে।

সেনাবাহিনীর অধীনে মায়াওয়াদ্দি টেলিভিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সেনাবাহিনীর সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের হাতে। ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর মিয়ানমারের সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি হয়েছে জানিয়ে, নতুন সংসদ অধিবেশন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে সামরিক বাহিনী। তবে গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন।প্রসঙ্গত, সামরিক অভ্যুত্থানের হুমকির বিষয়ে উদ্বেগের মধ্যেই দেশটির নতুন সংসদ অধিবেশন শুরু হওয়ার আগে জরুরি অবস্থা জারির এ ঘোষণা করে ।

এদিকে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) মিয়ানমারের জনসাধারণকে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। অপরদিকে অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে জাপান ও থাইল্যান্ডে প্রবাসী বর্মী নাগরিক বিক্ষোভ করেছেন।

সোমবার সেনা অভ্যুত্থানের পর অং সান সুচির নামে এনএলডি এক বিবৃতি প্রকাশ করে জানায়, সামরিক এই পদক্ষেপ অযৌক্তিক এবং এটি সংবিধান ও ভোটারদের ইচ্ছার পরিপন্থী।এনএলডির ভেরিফাইড এক ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এই বিবৃতিতে অং সান সুচির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, জনগণের উচিত এই সামরিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর।এতে আরো বলা হয়, ‘সামরিক এই পদক্ষেপ দেশকে একনায়কের অধীনে পেছনে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া।’এ দিকে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে জাপান ও থাইল্যান্ডে প্রবাসী বর্মী নাগরিকরা বিক্ষোভ করেছেন।

জাপানের টোকিওতে ইউনাইটেড ন্যাশনস ইউনিভার্সিটির সামনে শত শত বর্মী প্রবাসী অং সান সুচির ছবি নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপের নিন্দার আহ্বান জানান।বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে টোকিওতে রেস্টুরেন্টে কাজ করা ২২ বছর বয়সী বর্মী প্রবাসী তিন তাওয়ি বলেন, ‘আমি (আমার পরিবারের জন্য) উদ্বিগ্ন কিন্তু তারচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন অং সান সুচির জন্য।’

ইউনিয়ন অব মিয়ানমার সিটিজেন অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট থান সি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানে সুচি ও অন্য সকল বন্দীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানান।তিনি বলেন, ‘সামরিক বাহিনীর উচিত ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল স্বীকার করে নেয়া উচিত এবং তাদের বর্তমান পদক্ষেপ বন্ধ করা প্রয়োজন।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 + twenty =