সংবাদপ্রবাহ টিভি বিদেশ ডেস্ক :: ৬ই,ফেব্রুয়ারি :: লন্ডন :: যুক্তরাজ্যে ৪০ হাজার লোকের ওপর চালানো একটি সমীক্ষার পর বলা হচ্ছে ফাইজার ও অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনাভাইরাসের টিকা নিরাপদ। ব্রিটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষও বলছে, কিছু সামান্য ও প্রত্যাশিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়া এসব টিকা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ।
ব্রিটেনে এ পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি লোককে করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হয়েছে।লন্ডনের কিংস কলেজের জো এ্যাপস নামের গবেষণা দলটি – অন্তত এক ডোজ টিকা নিয়েছেন এমন ৪০ হাজার লোকের ওপর – সমীক্ষাটি চালায়।তারা তাদের রিপোর্টে বলছেন, এর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশের কিছু বেশি লোকের কিছু না কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে – যার কোনটিই গুরুতর কিছু নয়, এবং যে কোন টিকা নিলে এমন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াই সাধারণত হয়ে থাকে।রিপোর্টটি বলছে, ৩৭ শতাংশের ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে ছিল ব্যথা, এবং টিকা দেবার জায়গাটিতে ফুলে যাওয়া।
দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এমন লোকদের মধ্যে ৪৫ শতাংশের এ প্রতিক্রিয়া হয়েছে।যারা এক ডোজ টিকা নিয়েছেন তাদের ১৪ শতাংশের ক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছিল টিকা নেবার এক সপ্তাহের মধ্যে জ্বর, গায়ে ব্যথা, গা-শিরশির করা, দুর্বল বোধ করা বা মাথাব্যথা। যারা দুটি ডোজ নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে ২২ শতাংশ পর্যন্ত লোকের এমন প্রতিক্রিয়া হয়েছে। এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে গেছে।
ডাক্তাররা বলেছেন, এসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে টিকা গ্রহণকারীরা প্যারাসিটামল খেতে পারেন।গবেষকরা বলছেন, সবগুলো মেডিক্যাল ট্রায়াল এবং বাস্তব জগতের অভিজ্ঞতা থেকেই দেখা গেছে যে এই ভ্যাকসিনগুলো নিরাপদ ও কার্যকর।ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি টিকাটি নিলে অত্যন্ত বিরল কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর এ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে- কিন্তু তার পরিমাণ খুবই কম।বিজ্ঞানীরা বলছেন প্রতি ১ লক্ষ ডোজ গ্রহণকারীর মধ্যে এক বা দু’জনের ক্ষেত্রে গুরুতর প্রতিক্রিয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ডাক্তাররা অবশ্য ইতোমধ্যেই বলেছেন যে – যাদের গুরুতর এ্যালার্জির ইতিহাস আছে তাদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকাটি নেয়া উচিত হবে না।
ব্রিটেনের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, ব্রিটেনে টিকা নিয়েছেন এমন এক কোটিরও বেশি লোকের মধ্যে ১৪৩ জন টিকা নেবার পর মারা গেছেন – কিন্তু এসব মৃত্যু কোনভাবেই টিকা নেয়ার সাথে সম্পর্কিত নয়, তাই এ নিয়ে ভয় বা দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
টিকা নেবার পর দেহে করোনাভাইরাস প্রতিরোধী ক্ষমতা পুরোপুরি তৈরি হতে দু-তিন সপ্তাহ সময় লাগে বলে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন।