নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: শান্তিপুর :: বুধবার ২২,নভেম্বর :: ৩০০ বছরের পুরনো ইতিহাসের সাক্ষি নদিয়ার শান্তিপুর ব্রহ্ম শ্মশানের আদি জগদ্ধাত্রী পুজো, যেখান থেকে সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে জগদ্ধাত্রী পুজো।
শহর শান্তিপুরের অনতি দূরে ব্রহ্মশ্মশান। নদীয়া জেলার এই শান্তিপুর শহরেই স্বপ্নাদেশে জগদ্ধাত্রী মূর্তি স্থাপন ও তন্ত্র মন্ত্রের সূচনা হয় শান্তিপুর হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ব্রাহ্মশ্মশানে। যা এক সময় নদী বন্দর ভাগীরথীর ধারেই গড়ে উঠেছিল। নদীকে কেন্দ্র করে হরিপুর ছাড়িয়ে ব্রহ্মশ্মশানে ১০৮ ঘর ব্রাহ্মণ ও ঘোষ সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। সে সময় নদিয়ার রাজা ছিলেন কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পিতা রঘু রায়।
রাজবাড়ীতে পুজিতো দেবী জগদ্ধাত্রী খুব অল্প সময়েই পরিচিত লাভ করেন। এদিকে ব্রহ্মশ্মশানের ব্রাহ্মণ পণ্ডিত চন্দ্রচুর তর্ক রত্ন পঞ্চানন মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে দেবী বলেন, তুই আমার পূজা কর। ঘুম থেকে উঠে দেখবি তোর ঘরের দেওয়ালে রবির প্রভা বিকশিত হবে। ঐটিই হবে আমার রঙ। আমি সিংহ বাহিনী। স্বপ্নাদেশ পালন করে চন্দ্রচূড় জগদ্ধাত্রী পূজার সূচনা করেন ব্রহ্ম শাসনে।
১৮০২ খ্রিস্টাব্দ থেকে কৃষ্ণচন্দ্র রাজার পুত্র গিরিশচন্দ্রই নদিয়ার রাজা হন। তার কাছে খবর গেলে তিনি চন্দ্রচুর তর্করত্ন পঞ্চাননকে ডেকে পাঠান। বিভিন্ন বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়ার পর রাজা গিরিশচন্দ্র চন্দ্রচুর তর্করত্নকে তার রাজসভায় থাকার অনুরোধ করেন। সেই সঙ্গে অনুরোধ করেন দেবীর পূজার মন্ত্র পদ্ধতি তিনি ভাবনা করবেন।
রাজার অনুরোধেই চন্দ্রচুড় তন্ত্র সাধনায় বসেন। স্বয়ং মা জগদ্ধাত্রী, তার পূজার পদ্ধতি ও মন্ত্র চন্দ্রচুড় তর্করত্ন পঞ্চানন কে বলেন। সেই নিয়ম মেনেই রাজবাড়ীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আজও জগদ্ধাত্রী পূজিত হয়ে আসছেন।
এদিন শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী জগদ্ধাত্রী পূজা উপলক্ষে ব্রম্ভ শ্মশান মন্দিরে আসেন এবং মাতৃ আরাধনায় ব্রতী হন যদিও এই পুজোকে ঘিরে দেশ-বিদেশ থেকে পুন্যার্থীর পুনর্ত্তিক ঢল নামে শান্তিপুর ব্রহ্ম শ্মশান জগদ্ধাত্রী মন্দির প্রাঙ্গণে ।