দিদিমাকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন

সুদেষ্ণা মন্ডল  :: সংবাদ প্রবাহ ::  সোনারপুর  :: রবিবার ২৬,নভেম্বর ::  দিদিমা গঙ্গারানীকে ছাদে নিয়ে গিয়ে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে  খুন করা হচ্ছে রাতের বেলায়। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এলো সোনারপুর থানার পুলিশের হাতে।
দিদিমা ও ভাইকে খুনের অভিযোগে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেল পুলিশ। সম্পত্তির পাশাপাশি একাধিক কারণে এই খুন বলে জানা গিয়েছে। স্বামী ও স্ত্রী দুজনে মিলেই খুন করেছে বলে স্বীকার। এই ঘটনায় ধৃত সুস্মিতা দাস ও তার স্বামী শান্তনু দাসকে রবিবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হয় । ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয় । ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১, ৩৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃতদের ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে শান্তনু ও প্রিয়াঙ্কা কারোর বাড়ি থেকেই তাদের বিয়ে মেনে নেওয়া হয়নি। তাই তারা বাধ্য হয়েই এই বাড়িতে থাকছিলেন। এই বাড়িতে থাকা নিয়ে মাঝে মধ্যেই দিদিমা গঙ্গারানী দাসের সাথে ঝামেলা হত তাদের । একাধিক বার সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন গঙ্গারানী দেবী। সেই রাগও ছিল তাদের। প্রিয়াঙ্কার স্বামী শান্তনু নেশাগ্রস্ত ছিল। কোনো কাজই করত না।
দাদু পান্নালাল দাসের ফিক্সড করা টাকার সুদে তাদের সবার সংসার চলত। কিন্তু সেই টাকার কারণেই তাকে খুন করা হয় বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। এছাড়া দিদিমা গঙ্গারানীর কাছে বাচ্ছাকে রেখে কোথাও গেলে দিদিমা যত্ন করত না। এইসব একাধিক কারণ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে পুলিশ সুত্রে।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, দুর্গাপুজোর সময় বিজয় দশমীর দুদিন পর এই ঘটনা। একইদিনে ভাই মানসরঞ্জন ওরফে বিট্টু দাসকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। পরেরদিন দুপুরবেলা দুজন মিলে দেহ সেফটিক ট্রাঙ্কে ফেলে দেয়। তারপর নতুন করে সিল করা হয় সেফটিক ট্রাঙ্ক। পরিবারের বা বাইরের কেউ তাদের খোঁজ করতে এলে বিষয়টি চাপা দিতে বিভিন্ন জনকে তারা নানান কথা বলত বলে পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে।
উল্লেখিত , সোনারপুর থানা এলাকার জগদ্দল এলাকায় থেকে শনিবার রাতে মাস খানেকের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ ছিলেন গঙ্গারানি দাস (৭৫) ও তাঁর নাতি মানসরঞ্জন দাস ওরফে বিট্টু (২৫)। বিট্টু বিশেষভাবে সক্ষম যুবকের পচা গলা মৃতদেহ বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।  এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + two =