আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: সংবাদ প্রবাহ :: নয়াদিল্লি ব্যুরো :: বুধবার ১৩,ডিসেম্বর :: আমরা আতংকিত এবং নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি । আজ একি দেখলাম সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে !! দীর্ঘ ২২ বছর পর ফের হামলা হল সংসদ ভবনের অন্দরে।
২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা, আর তেইশের একই দিনেই সংসদের অন্দরে লোকসভার দর্শকাসন থেকে থেকে সাংসদদের বেঞ্চের দিকে ঝাঁপ দিলেন দুই যুবক। এই দুই যুবকের হাতে ছিল ক্যানিস্টার। তারা ক্যানিস্টার খুলে দেন লোকসভার মধ্যেই। সেগুলো থেকে বেরোতে থাকে গল গল করে হলুদ রঙের ধোঁয়া বা গ্যাস।
চারজন নয়, ছয়জন সন্দেহভাজন এসেছিল সংসদে । ইতিমধ্যে চারজনকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু বাকি দুজনের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনার পরেই দ্রুত সংসদ এলাকা ছেড়ে পালায় দুজন। খুব শীঘ্রই পলাতক দুজনকেও আটক করা হবে বলেই দাবি পুলিশের। অন্যদিকে ঘটনার পরেই সংসদে ছুটে আসেন সিআরপিএফের ডিজি সহ দিল্লি পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন আতঙ্ক ছড়ায় লোকসভায়। এদিন আচমকাই সেখানে ঢুকে পড়ে চার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। হলুদ গ্যাস ছড়ায় তাঁরা। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে সংসদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। কড়া সুরক্ষা বলয় ভেদ করে কীভাবে ওই ব্যক্তিরা ভিতরে প্রবেশ করলেন? কারণ সংসদের ভিতরে ঢুকতে গেলে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরতে হয়।
সাংসদ হনুমান বেনীয়য়াল এক হামলাকারীকে ধরে ফেলেন :: ছবি ইন্টারনেট
ঘটনার পরেই আতঙ্কিত সমস্ত সাংসদরা। দ্রুত অধিবেশন ছেড়ে বেরিয়ে যান।, ঘটনার পরেই আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা পর্যন্ত অধিবেশন স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে সাংসদ এবং সংসদ ভবনের নিরাপত্তা। এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন খোদ স্পিকার ওম বিড়লা। তিনি জানিয়েছেন, এদিনের এই ঘটনা সবার জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। একেবারে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় ধৃত তিনজনকে ইতিমধ্যে জেরা শুরু করা হয়েছে। তাঁরা নিজেদের ছাত্র বলেই দাবি করেছে এর আগে সংবাদমাধ্যমে। তবে তদন্ত নিয়ে স্পিকটি নট দিল্লি পুলিশ। সূত্রের খবর, গোটা ঘটনা একেবারে নিখুঁত ভাবে প্ল্যান করা হয়েছে। তদন্তকারীরা মনে করছেন ছয়জন এসেছিল সংসদে।
ঘটনায় দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১ যুবতী সহ মোট চারজন। ধৃত যুবতী নীলম পুলিশকে জানিয়েছেন তাঁদের হামলার কারণ। কে এই নীলম? জানা গিয়েছে, নীলম সহ ধৃত প্রত্যেকের বাড়ি মহীশূরে।
সংসদ হামলায় ধৃত নীলম এখন জেরার মুখে
এদের সংসদে প্রবেশের পাস ইস্যু করা হয়েছিল মহীশূরের বিজেপি সাংসদ প্রতাপ সিনহার অফিস থেকে। এদিন নীলম বলেন,”আমার নাম নীলম। আমি ভারতের সাধারণ নাগরিক। নিজেদের অধিকারের কথা বলতে গেলে লাঠিচার্জ করা হয়, জেলে ঢুকিয়ে অত্যাচার চালানো হয়। এরই প্রতিবাদ জানাতে আমরা এসেছিলাম।” এদিন নীলম আরও জানান, “আমরা শিক্ষিত বেকার। আমাদের চাকরির কথা বলতে গেলে পুলিশ দিয়ে কণ্ঠরোধ করা হয়। এই অপশাসন বন্ধ হোক। এটা জানাতেই এভাবে এসেছি।”
কিন্তু এরপর বিশ্বের সামনে ভারতের ঠুনকো নিরাপত্তার রূপটাই বেরিয়া আসলো দিনের আলোয় । যেখানে খোদ প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল কিন্তু এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কোনো মন্তব্য দেশবাসীর এখনো অজানা ।