হাইকোর্টের নির্দেশে গতবছরের মতো এবছরও পুরোপুরি বন্ধ এতে মাথায় হাত বর্ধমানের বাজি বিক্রেতাদের।

উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ :: বর্ধমান :: হাইকোর্টের নির্দেশে গতবছরের মতো এবছরও পুরোপুরি বন্ধ থাকছে বাজি পোরানো। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট সেই নির্দেশিকাই দিয়েছে। এতে মাথায় হাত বর্ধমানের বাজি বিক্রেতাদের। লক্ষ লক্ষ টাকার বাজি এখন কি হবে সেটাই বুঝতে পারছেন না তাঁরা। পরপর দুবছর হাইকোর্টের বাজি বিক্রি বন্ধের নির্দেশে বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজারে বাজির দোকানজুড়ে বিষণ্ণতা। এমনিতেই করোনা কারণে হাইকোর্টের নির্দেশে গতবার বাজি বিক্রি হয়নি। সেই নির্দেশিকা এবারও বহাল থাকায় কার্যত মাথায় হাত তাঁদের। বিপুল লোকসানের মুখে পড়তে হলো বাজি বিক্রেতাদের।

প্রসঙ্গত, করোনার কারণে গতবার থেকেই বাজি বিক্রি তলানিতে। কারণ বাজির ধোঁয়ায় কোডিড আক্রান্ত রোগী ও কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগী উভয়ের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মত চিকিৎসকদের। এমনকি সাধারণ মানুষের শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা হতে পারে। তাই গতবার বাজি পোরানো পুরোপুরি নিষিদ্ধ ছিল।

তখন বড় লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁদের। তবে বছর ঘুরতে ফের একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হলো তাঁদের। যদিও এবার অনেক আশা নিয়ে দীপাবলীতে বাজারে নেমেছিলেন বর্ধমানের তেঁতুলতলা বাজারের বাজি বিক্রেতারা। সেইমতো লাখ টাকার বাজিও তুলেছিলেন বর্ধমানের অধিকাংশ ব্যবসায়ী। সঙ্গে ছিল পুরোনো স্টক।

কালিপুজোর দিন এগিয়ে আসার সাথে সাথে চাঙ্গা হচ্ছিল বাজির বাজার। নির্দেশমতো শব্দবাজি তোলেননি বলে দাবি বাজি বিক্রেতাদের। অধিকাংশ দোকানেই ‘শব্দবাজি বিক্রি হয়না’ প্লাকার্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন তাঁরা। তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। পর্ষদ জানিয়েছিল, এবার দীপাবলীতে স্রেফ দু’ঘণ্টার জন্য গ্রিন ক্র্যাকার্স ফাটানো যাবে।

নির্দেশমতো ব্যবসায়ীরাও পরিবেশ বান্ধব বাজি তুলেছিলেন। কিন্ত সেই পরিবেশ বান্ধব বাজি কি, সেই নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। আদৌ সেই গ্রিন ক্র্যাকার্স পরিবেশ বান্ধব কিনা তা নিয়ে ধন্দে পড়তে হয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, বিক্রেতারা সাধারণ বাজিগুলিকে গ্রিন বাজি বলে বেচে দিচ্ছিলেন। অবশেষে শুক্রবার কালীপুজোয় সব ধরনের বাজি পোরানো ও বিক্রি নিষিদ্ধ করে কলকাতা হাইকোর্ট। এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন পরিবেশবিদরা।

এই রায়ে হতাশ বর্ধমানের বাজি বিক্রেতারা। কারণ ভালো ব্যবসার আশায় অনেকেই পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি তুলেছিলেন। তবে এবার তা গোডাউনে স্টক করতে হবে। যার ফলে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে বর্ধমানের তেঁতুল তলা বাজার এর বাজি বিক্রেতারা। বাজি বিক্রেতা শেখ জুলফিকার বলেন, এবার আমি তিন লাখ টাকার বাজি তুলেছিলাম। সঙ্গে গতবারের স্টকও কিছু ছিল।

নির্দেশমতো আলাদা করে গ্রিন ক্র্যাকার্স তুলেছিলাম। অনেকেই এসে শব্দবাজির খোঁজ করেছেন কিন্তু তা বেচিনি। গতবারের মতো এবারও ব্যবসা হলো না। পাঁচ লাখ টাকার বাজি তুলেছিলেন সুরাজ পণ্ডিত। তিনি বলেন, আমি প্রায় সবটাই গ্রিন ক্র্যাকার্স তুলেছিলাম। এবার তাতেও ব্যান পড়ল। এবারও বাজি বিক্রি নিষিদ্ধ। জানি না কি করবো। বড় লোকসান হয়ে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 16 =