ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে দাউদ ইব্রাহিমের দাপট – আমদানি-রপ্তানির হাল বেহাল

নিউজ ব্যুরো :: সংবাদ প্রবাহ :: কোলকাতা :: ট্রাক ইউনিয়নের মালিক সংগঠনের অভিযোগ ও সীমান্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, বছরখানেক আগে থেকে গরু পাচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই এই নতুন ব্যবসা চালু হয়। এর নেপথ্যে রয়েছে বসিরহাটের জনৈক দাউদ ইব্রাহিম। তারই অঙ্গুলিহেলনে হয় সব কিছু। দীর্ঘদিন ধরে বসিরহাটে গরু ও সোনা পাচারের হোতা ছিলেন তিনি। গরু বন্ধ হতেই শুরু হয়েছে এই নতুন ব্যবসা। মূলত চারটি ভাগে চলে এই চাঁদার জুলুম। গুন্ডা ট্যাক্স, অবৈধ টোল ট্যাক্স, আবার গুন্ডা ট্যাক্স, এবং সব শেষে পণ্য খালাসের পর সিরিয়ালের নামে গুন্ডা ট্যাক্স।

ট্রাক মালিকদের দাবি, মূলত শাসকদলের নাম করে স্থানীয় দুষ্কৃতীরা এই গুন্ডারাজ চালাচ্ছে। যার ফলে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বাণিজ্য প্রায় বন্ধের মুখে। এনিয়ে সম্প্রতি ভারত চেম্বার অব কমার্সের একটি আলোচনা সভায় উপস্থিত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত সাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রপ্তানিকারকরা। তার প্রেক্ষিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।

অভিযোগ, নতুন করে কর ধার্য করা হয়েছে আমদানি-রপ্তানির ট্রাকগুলোর উপর। বসিরহাট ব্রিজ পেরিয়ে ঢ্যামঢেমিয়া, সাতক্ষীরা রোডে কলবাড়ি এবং একেবারে জিরো পয়েন্টে ঢোকার মুখে গাড়ি পিছু দিতে হয় দেড় হাজার থেকে তিন হাজার টাকা। কোনওটিতে লেখা ‘শ্রমিক ইউনিয়ন’, কোনওটিতে ‘কর্মহীন শ্রমিক বাঁচাও কমিটি’ বা ‘বর্ডার গাইড’।

এই রকম বিভিন্ন নামে বিল ছাপিয়ে ট্রাকগুলির উপর থেকে কর আদায় করে বেশ কয়েকটি ছেলে। হিসাব কষে দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন ৪০০টি ট্রাক হিসাবে তিন জায়গা থেকে প্রতিদিন তোলা হয় ৮ লক্ষ, ১ লক্ষ ৪৪ হাজার এবং ৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। বছরে ২৯ কোটি ২০ লক্ষ, ৫ কোটি ২৫ লক্ষ ৬০ হাজার এবং ১১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা ওঠে। যদি টাকা না দেওয়া হয় তাহলে ট্রাক যেতে দেওয়া হয় না। ট্রাকচালকদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

এই সমস্ত অবাঞ্ছিত ট্যাক্স বাদ দিলেও ঘোজাডাঙা সীমান্তে যেখানে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে পণ্যবোঝাই ট্রাক, সেখানে প্রত্যেক দিন সিরিয়াল অনুযায়ী যায় ৪০০ ট্রাক যায়। সেই সিরিয়ালে নাম তুলতে দিতে হবে ৩৫ হাজার টাকা। তা না দিলে দিনের দিনে পণ্য নিয়ে যেতে পারবে না ট্রাকগুলো। যে সমস্ত ট্রাক এই টাকা দেবে তারাই আগে যেতে পারবে। না হলে পণ্য নিয়ে বসে থাকতে হবে প্রায় ৪০ দিন। নষ্ট হচ্ছে অধিকাংশ কাঁচামাল। তাই পণ্য বাঁচাতে অধিকাংশ ট্রাক এই ট্যাক্স দিতে বাধ্য হয়।

সারা বাংলা ট্রাক মালিকদের সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক সজল ঘোষ জানান, “এটা সীমান্তে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। ট্রাক ড্রাইভাররা বহুবার আক্রান্ত হয়েছেন। তাই ঘোজাডাঙা স্থলবন্দর থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীরা। আগামী দিনে এই সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” ইতিমধ্যেই ব্যবসায়ীরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, পরিবহণমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, রাজ্যপাল, রাষ্ট্রপতি থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতাকেও অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিষয়টি সম্পর্কে অবগত তথ্য ও সংবাদ সূত্র :: সংবাদ প্রতিদিন 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × two =