প্রদীপের আলোর মতো টিম টিম করে জ্বলছে বহুরূপী ও তাদের সাজ শিল্পও। 

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: শান্তিপুর :: সোমবার ১৫,এপ্রিল :: চৈত্রের শেষের দিকে যে সকল উৎসব অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো শিবের গাজন, নীল ষষ্ঠী পুজো চড়ক উৎসব, প্রভৃতি। আর বিশেষ করে গ্রাম বাংলা তথা মহঃস্বল এলাকায় এই অনুষ্ঠান গুলো আজি পুরোনো ঐতিহ্য, নিয়ম নিষ্ঠা ও রীতি মেনেই অনুষ্ঠিত হয়।

আর এই অনুষ্ঠানের মতোই অন্যতম অষ্টক গান, বহুরূপী শিল্পীদের বিভিন্ন বেশে সেজে নাচগান সমান ভাবেই সমাদৃত। যদিও বহু এলাকায় এই অষ্টক গান আজ প্রায় বিলীনের পথে, আর প্রদীপের আলোর মতো টিম টিম করে জ্বলছে বহুরূপী শিল্পী ও তাদের সাজ শিল্পও।

শুক্রবার ছিলো নীল ষষ্ঠী ও শনিবার চড়ক পুজো, সহ চলছে গাজন উৎসবও।আর নদীয়ার শান্তিপুর, ফুলিয়ার একাধিক জায়গায় বহুরূপী সেজে এই গাজন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে আজও।

তেমনই চৈত্রের রোদকে উপেক্ষা করেই ঢাকের তালে গাজন উপলক্ষে শিব পার্বতী সেজে মেতে উঠলেন ফুলিয়ার বিভিন্ন এলাকার মানুষ। সকাল থেকেই শুরু হয় শিব, পার্বতী, রাধাকৃষ্ণ সহ বিভিন্ন দেব দেবীর রূপের সাজে বহুরূপী দের আনাগোনা।

তবে কোথাও যেন সেই প্রদীপের নিচেই অন্ধকারের মতো আক্ষেপ এই বহুরূপী শিল্পীদের। কারন নদীয়ার ফুলিয়া চটকাতলা এলাকার সুখেন সরকার, বিশ্বজিৎ বসাকেরা জানান তারা সহ অধিকাংশ বহুরূপী শিল্পী তাঁত শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। তাঁতের বাজার একদম খারাপ হওয়ার কারনে বিগত দশ বছর ধরে তারা এই পেশায় নিযুক্ত আছেন।

তারা আরও জানান প্রতিবছরই এই চৈত্র মাস উপলক্ষে গাজন উৎসবে তারা এই রকম বহুরূপী সেজে নৃত্য, অভিনয় পরিবেশন করে।তবে এবছর এই সময়ে লোকসভা নির্বাচনের কারনে বায়না তেমন হয়নি, এক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় এই সময় দুটো বার্তি রোজগারের আশায় এসেছি, কিন্তু এবছর চাহিদা কমে যাওয়ায় মন খারাপ তাদের।

এবছর সাত- আট টি জায়গায় যেতে হবে সাজাতে, কিন্তু একটা সময় ছিলো সংখ্যা টা অনেক হতো, এখন আর তা হয় না। তবে অল্প হলেও এদিন তীব্র দাবদাহের মধ্যেই ফুলিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেলো এই গাজন উৎসবপ মেতে উঠতে স্থানীয় দের।

পাশাপাশি মাঝে মধ্যেই জীবন্ত দেবদেবীকে দেখা গেলো প্রচন্ড প্রখর রোদের হাত থেক কিছুটা স্বস্তি পেতে পাখার বাতাস খেয়ে নিচ্ছেন কোথাও বা ঠান্ডা পানীয় জল খেয়ে বিশ্রাম নিতে। তবে তথাকথিত ডিজিটাল যুগ বা আধুনিকতার ছোয়ায় যতোই মানুষ নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যাক নদীয়ার পুরোনো ঐতিহ্যকে যে আজও শান্তিপুর, ফুলিয়ার মতো এলাকার মানুষ বাচিয়ে রেখেছে এটাই বড় পাওনা, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কতোটা এই ভাবে ঐতিহ্যকে ধরে রাখবে এটাই এখন প্রশ্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − 4 =