নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: রামনগর :: বুধবার ১১সেপ্টেম্বর :: গভীর রাতে এটিএম ভেঙে লক্ষ লক্ষ টাকা লুট করে পুলিশের জালে ধরা পড়ল বিটেক ইঞ্জিনিয়ার । ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে। উচ্চশিক্ষার জন্য টাকা না পেয়ে, অবশেষে ব্যাংকের এটিএম লুট করে উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ার বাসিন্দা উত্তম মাইতি।
গত ৮ মে এটিএম কেটে টাকা লুট করেছিল এই ৩৫ বছরের ইঞ্জিনিয়ার উত্তম। প্রায় তিন মাসের পর হাবড়ার বাড়ি থেকে ধরা পড়ে সেই যুবক। গ্রেফতারের পর তাকে কাঁথি আদালতে পেশ করে পুলিশ। আদালতে নির্দেশে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করে। সেই যুবককে নিয়ে পুরো ঘটনার পুনঃনির্মাণ করে রামনগর থানার পুলিশ। যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে এটিএম লুটের কাহিনী শুনে রীতিমতো হতবাক পুলিশ।
একবার দিঘায় বেড়াতে এসে রামনগর বাসস্ট্যান্ডে তার নজরে পড়েছিল একটি এটিএম, খুব নির্জনে রয়েছে। সেই থেকে টার্গেট করেছিল উত্তম। প্রথমে মেচেদার একটি গ্যাসের দোকান থেকে গ্যাস সিলিন্ডার সহ এটিএম কাটার বার্ণার সংগ্রহ করে। সরঞ্জাম বাসে চাপিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘার কাছে রামনগর থানা এলাকার রামনগর বাসস্ট্যান্ডে এসে পৌঁছায়।
রাত্রি নটার দিকে পৌঁছে একটি গুমটি দোকানের আড়ালে প্রায় মাঝ রাত্রি পর্যন্ত অপেক্ষা করে। এরপর গ্যাস সিলিন্ডার সহ গ্যাস কাটার নিয়ে সেই এটিএম এ ঢুকে পড়ে। তখন প্রায় রাত্রি ১২ টা। রাস্তাঘাট, বাস স্ট্যান্ড শুনশান। তখন উত্তম এটিএম এর শাটার নামিয়ে দেয়। তার আগে শাটারের বাইরে শাটার নামিয়ে লিখে দেয় এটিএম বিকল রয়েছে।
এরপর চলে তিন ঘন্টা ধরে অপারেশন। এটিএম এর সাইডে গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে ভেতর থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। নিজে যেহেতু ইঞ্জিনিয়ার টাকা কিভাবে কোথায় থাকতে পারে সেটা তার অজানা ছিল না। প্রায় ভোররাতে রাস্তায় যখন যান চলাচল মানুষজনদের চলাচলের শব্দ পায়, গ্যাস কাটার সরঞ্জাম এটিএম এর মধ্যে ফেলেই, কেবল টাকার ব্যাগ নিয়ে চম্পট দেয় ইঞ্জিনিয়ার যুবক।
এরপর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানতে পারে। হইচই পড়ে যায় এলাকায়। রামনগর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গ্যাস কাটার সহ সেই সমস্ত সরঞ্জাম সিজ করে। তারপর সিসিটিভির ফুটেজ দেখে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ধরা পড়ে সেই যুবক।
এর আগে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক শহরে একটি বেসরকারি ব্যাংকের এটিএমও লুট করার চেষ্টা চালিয়েছিল এই যুবক। জিজ্ঞাসাবাদ করে এমন তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। এমন দুঃসাহসিক এটিএম লুটের ঘটনায় সেই যুবক একা ছিল নাকি, সঙ্গে আর কেউ ছিল – সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।