স্বামীর ঘুম ভাঙাতে পুলিশ ডেকে ভাঙা হলো দরজা!

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: চুঁচুড়া :: এ কেমন ঘুম, যা ভাঙাতে পুলিশ ডেকে দরজা ভাঙতে হয়! শনিবার চুঁচুড়ার বড়বাজার এলাকার একটি আবাসনে সেরকমই এক ঘুমের সাক্ষী হয়ে থাকলেন এলাকাবাসী। যেখানে পুলিশ ডেকে দরজা ভেঙেই ঘুম ভাঙাতে হলো গৃহকর্তার। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বড়বাজারের এক আবাসনের তিন তলার ফ্ল্যাটে সৌমেন নিয়োগী তার স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। বছর বিয়াল্লিশের সৌমেনবাবু রেলের শিয়ালদহ শাখায় কর্মরত। শুক্রবার সৌমেন বাবুর স্ত্রী বর্ধমানের বাপের বাড়িতে একটি বিয়ের বাড়ির অনুষ্ঠানে যান। শনিবার সকালে স্বামীর সঙ্গে ফোনে কথাও হয়। তারপর বেলা বাড়লে বেশ কয়েকবার ফোন করে স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে আবাসিকের এক বাসিন্দা মনোজিৎ দত্তকে ফোন করে স্বামীকে ডেকে দিতে বলেন।

মনোজিৎ বহু বার কলিং বেল বাজিয়ে ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ পাননি। আবাসনের অন্যান্য আবাসিকরা রীতিমতো জোরে জোরে দরজায় ধাক্কা দিয়ে চিৎকার করে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েন। অন্যদিকে, শনিবার সকাল থেকে কেউই সৌমেন বাবুকে বাইরে বেরোতে দেখেননি। প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক ধরে ডাকাডাকি, দরজা ধাক্কাধাক্কি চলে। শেষ পর্যন্ত মনোজিৎ দত্ত বিষয়টি সৌমেনবাবুর স্ত্রীকে জানান। তিনি আশঙ্কিত হয়ে পড়েন। প্রতিবেশীদের বলেন, যেকোনওভাবে দরজা ভেঙে ফেলতে বলেন। নিজে বাবার বাড়ি থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান ফেলে রেখে চুঁচুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

এরপর মনোজিৎ দত্তই চুঁচুড়া থানায় খবর দেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছানোর পর মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়। হাতুড়ি, ছেনি দিয়ে মিস্ত্রিরা কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙেন। এরপর আবাসনের ফ্লাটের দরজা ভাঙা শুরু হয়। টানটান উত্তেজনা ও সাসপেন্স নিয়ে তখন ফ্ল্যাটের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেনন অন্য আবাসিকরা। মনের ভেতর এক অজানা আশঙ্কা কাজ করে চলেছিল। তারপর দরজা ভাঙতেই সমস্ত যবনিকা পতন।

দরজা ভাঙার পর দেখা যায় গৃহকর্তা সৌমেন বাবু খালি গায়ে বারমুডা পরে আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বেরিয়ে আসছেন। চোখের সামনে আবাসিকদের ভাঙা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাদের দিকে বিস্ময় নিয়ে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন। ঘড়িতে তখন দুপুর আড়াইটে। হঠাৎ সম্বিত ফেরে সৌমেনবাবুর। মনে পড়ে যায় স্ত্রীকে ফোন করার কথা। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, এগারোটায় বেরোবেন। কিন্তু তারপরই ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে চুপ করে যান তিনি। পরে নিজের কীর্তি জেনে নিজেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + seventeen =