নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কুলতলী :: বৃহস্পতিবার ৯,জানুয়ারি :: টানা দুদিন লোকালয়ে লুকোচুরির পর অবশেষে জঙ্গলে ফিরে গেল বাঘ। উত্তর বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গল থেকে মাকড়ি নদী পেরিয়ে আজমলমারি ১১ গভীর জঙ্গলে বাঘ ফিরে গিয়েছে বলে বুধবার জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভাগীয় মুখ্য বনাধিকারিক নিশা গোস্বামী।
সোমবার সকালে কুলতলির মৈপীঠের কিশোরীমোহনপুরে নদীর চরে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান এলাকার মৎস্যজীবীরা । এরপর বাঘের আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে গোটা গ্রাম। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বনকর্মী ও বিরাট পুলিশ বাহিনী । মঙ্গলবার সকালে বাঘের অবস্থান বদল হয় । অবস্থান বদলে উত্তর-পূর্বে সরে আসে সুন্দরবনের সেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ ।
উত্তর জগদ্দল লাগোয়া নদীর ধারে পায়ের ছাপ দেখে তার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নতুন করে প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকা জাল দিয়ে ঘেরা হয় । লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় বাঘ চলে আসায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা।
জঙ্গলের পাশেই তাদের বসবাস। রুজি রুটির জন্য তাদের জঙ্গলেও যেতে হয়। সেই ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। এলাকার বাসিন্দারা লোকালয় সংলগ্ন গোটা জঙ্গল জাল দিয়ে ঘিরে ফেলার দাবি জানান। এছাড়া রাস্তায় যাতে পর্যাপ্ত আলো লাগানো হয় তারও দাবি জানান তারা।
এদিনই দক্ষিন বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। সেই জঙ্গল বনকর্মীরা জাল দিয়ে ঘিরলেও সেখান থেকে পালিয়ে যায় বাঘ। প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে উত্তর বৈকুন্ঠপুর সংলগ্ন জঙ্গলে অবস্থান করে।
এই জঙ্গলে বাঘের উপস্থিতি টের পেয়ে আবারও জঙ্গল ঘেরার কাজ শুরু করা হয় । রাত পর্যন্ত কোনো ভাবে তার নাগাল না পেয়ে অবশেষে জঙ্গল লাগোয়া নদীর পাড়ে খাঁচা পাতা হয়। টোপ হিসেবে রাখা হয় ছাগল । বাঘকে গভীর জঙ্গলে ফিরিয়ে দিতে একাধিকবার শব্দবাজিও ফাটানো হয়।
নদীতে ভাটা ছিল। তাই রাতেই বাঘ নদী পেরিয়ে চলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার জলপথে ও জালঘেরা অংশে তল্লাশি চালিয়ে বাঘের হদিস পাওয়া যায়নি। তবে উত্তর বৈকুন্ঠপুরের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আজমলমারির জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার বাঘের পায়ের ছাপ পাওয়া গিয়েছে। যা দেখে বন আধিকারিকরা নিশ্চিত যে বাঘ গভীর জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে।