ব্যুরো নিউজ :: সংবাদ প্রবাহ :: কলকাতা :: বুধবার ২৬,মার্চ :: বিদেশের মাটিতে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ‘র’ বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানাল মার্কিন কমিশন।
বিদেশে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার যড়যন্ত্রে জড়িত ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’ । এই অভিযোগ তুলে ‘র’-কে নিষিদ্ধ করার দাবি আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক মার্কিন কমিশনের। ২০২৩ সাল থেকেই আমেরিকা ও কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ তোলা হয়েছে ‘র’-এর বিরুদ্ধে।
প্রাক্তন ভারতীয় গোয়েন্দা কর্তা বিকাশ যাদবের বিরুদ্ধেও ব্যর্থ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল আমেরিকা। যদিও প্রথম থেকেই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে ভারত সরকার।
বাইডেন শাসনে মার্কিন নাগরিক খলিস্তানি জঙ্গি গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছিল ‘র’ এর বিরুদ্ধে। কানাডায় নিজ্জর খুনেও একই অভিযোগ ওঠে। যদিও শুরু থেকে এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এবার সেই প্রসঙ্গ তুলেই মার্কিন রিপোর্টে অভিযোগ তোলা হয়েছে, বিদেশের মাটিতে হত্যা ও হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ভারতের ‘র’। ফলে এই সংস্থাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করুক মার্কিন সরকার। অবশ্য মার্কিন কমিশনের এই অভিযোগ প্রথমবার নয়, এর আগেও একাধিকবার ভারতের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেছে এই সংস্থা। যদিও প্রতিবারই বিদেশমন্ত্রকের তরফে অভিযোগ খারিজ করে বলা হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্য ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ ও ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’।
সম্প্রতি পাকিস্তানেও কয়েকটি জঙ্গি নেতার হত্যায় পাকিস্তান দাবি করেছিল এতে ভারতের হাত রয়েছে । কিন্তু ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক সেই দাবি জোরের সঙ্গেই নাকচ করে দেয় ।
মার্কিন কমিশনের আরও দাবি শুধু তাই নয়, নরেন্দ্র মোদির সরকারে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা তলানিতে নেমেছে বলে অভিযোগ করেছে এই কমিশন । তাদের দাবি, ২০২৪ সালে ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও বৈষম্যের ঘটনা অনেক বেড়েছে।
এর নেপথ্যে মোদি সরকার ও বিজেপির ঘৃণা ভাষণকে দায়ী করেছে সংস্থা। তাদের দাবি, গত বছর ভারতে লোকসভা নির্বাচনে মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘৃণাভাষণ ও লাগাতার মিথ্যা প্রচার চালিয়েছে বিজেপি।
এমনকী খোদ মোদির বক্তব্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, যেখানে নাম না করে মুসলিমদের ‘অনুপ্রবেশকারী’, ‘যারা বেশি সন্তানের জন্ম দেয়’ বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কমিশনের দাবি, যত দিন যাচ্ছে, ভারতে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে অভিযোগ খারিজ করে বলা হয়েছে, এই ধরনের মন্তব্য ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’।
বলা হয়, ভারত ও ভারতের সাংবিধানিক পরিকাঠামো, তার বহুত্ব ও গণতান্ত্রিক নীতিকে বুঝতে ভুল হচ্ছে এই কমিশনের। অতীতের সেই ধারা অব্যাহত রেখে এবারও একই অভিযোগ তুলল মার্কিন কমিশন। অদ্ভুতভাবে এই রিপোর্টে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি।
যদিও ভারতের পাশাপাশি কমিউনিস্ট দেশ ভিয়েতনামকে উদ্বেগের দেশগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিশন। মার্কিন কমিশনের এই রিপোর্টের পালটা কূটনৈতিক মহলের দাবি, যে আমেরিকা এই অভিযোগ তুলছে সেই আমেরিকাতেই বর্ণবিদ্বেষের জেরে জর্জ ফ্লয়েড হত্যার মতো ঘটনা ঘটে।
এবার রিপোর্টে বাড়তি হিসেবে যুক্ত করা হয়েছে ভারতের গুপ্তচর সংস্থাকে নিষিদ্ধ করার দাবি। যদিও এই রিপোর্টকে কোনওবারই বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি হোয়াইট হাউস। অতীতের ট্রাম্প থেকে বাইডেন, কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের আমলেই কিন্তু কমিশনের সুপারিশকে আমল দেওয়া হয়নি।