“রাসায়নিকের নয়, প্রাকৃতিক শক্তির জয় — কুমারগ্রামে কৃষিতে নব দিশা দেখাচ্ছে ধইঞ্চা চাষ”

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কুমারগ্রাম :: বৃহস্পতিবার ১২,জুন :: জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে রাসায়নিক সারের একচেটিয়া ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা বাড়ছিল কৃষি বিজ্ঞানী থেকে পরিবেশবিদদের মধ্যে। তবে এবার সেই দুশ্চিন্তার আশার আলো দেখাচ্ছে উত্তরবঙ্গের কুমারগ্রাম ব্লক।

পরম্পরাগত কৃষি বিকাশ যোজনার আওতায়, কৃষি দফতরের উদ্যোগে শুরু হয়েছে ‘সবুজ সার’ ধইঞ্চা চাষের নতুন অধ্যায়। ধইঞ্চা একটি অনন্য গাছ, যার শেকড়ে রয়েছে নাইট্রোজেন সংশ্লেষণের ক্ষমতা।এই গাছ যখন বড় হয়, তখন সেটিকে জমিতে মিশিয়ে দেওয়া হয়। এতে জমির জৈব শক্তি বেড়ে যায়, উর্বরতা বৃদ্ধি পায়, এবং রাসায়নিক সারের প্রয়োজন অনেকটাই কমে যায়।

ভারত, বাংলাদেশ ছাড়াও আফ্রিকার খরাপ্রবণ অঞ্চলেও এই উদ্ভিদ দিব্যি টিকে থাকে। লবণাক্ত কিংবা বালুময় মাটিতেও এর ফলন ভালো হয়, যা একে করে তুলেছে প্রাকৃতিক কৃষির নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।

কুমারগ্রামের পশ্চিম নারান গ্রামে কৃষক বিমল রায় ও খগেন্দ্র নাথ রায়ের জমিতে এই প্রকল্পের আওতায় চালু হয়েছে ধইঞ্চা চাষের মডেল ডেমো। কৃষি আধিকারিকদের উপস্থিতিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে একটি ফিল্ড ডেমো, যেখানে কুমারগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত কৃষকেরা অংশগ্রহণ করেন।

ফিল্ড ডেমোতে কৃষকদের একটাই উপলব্ধি — “আগে ভাবতাম রাসায়নিক সার ছাড়া ফসল ফলানো কঠিন, এখন দেখছি ধইঞ্চা দিয়েই সম্ভব।” এই পদ্ধতিতে চাষে খরচ কমছে, মাটি পাচ্ছে প্রাণ, আর ফলনও বাড়ছে চোখে পড়ার মতো।

এই প্রয়াস শুধু কৃষিতে প্রাকৃতিক পদ্ধতির ফিরে আসার কথা বলছে না, বরং কৃষকদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 2 =