২০২৫ সালের ১২ জুন আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় পাইলট এবং কো-পাইলটের আত্মত্যাগ ও পেশাদারিত্বের কাহিনী হৃদয় বিদারক।

আনন্দ মুখোপাধ্যায়  :: সংবাদ প্রবাহ :: নিউজ ডেস্ক  :: শনিবার ১৪,জুন :: এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট ১৭১, একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে উড়ান করেছিল।

উড়ানের মাত্র কয়েক মিনিট পর, বিমানটি ৬২৫ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর আচমকা নিচে নামতে শুরু করে এবং শহরের বি.জে. মেডিকেল কলেজের আবাসিক হোস্টেলের ওপর বিধ্বস্ত হয়।

                                                                               কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডার

দুর্ঘটনায় ২৪১ জনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডীয় নাগরিক ছিলেন। শুধুমাত্র ৪০ বছর বয়সী ব্রিটিশ নাগরিক বিশ্বাস কুমার রমেশ বেঁচে যান।

ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার একজন অভিজ্ঞ পাইলট, যাঁর প্রায় ৩০ বছরের উড়োজাহাজ চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। তিনি বিমানটির পাইলট ছিলেন এবং দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।

দুর্ঘটনার সময় তিনি রেডিওতে ‘মেডে’ সংকেত পাঠান, যা একটি জরুরি সংকেত। তাঁর সহকর্মীরা জানান, তিনি পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছিলেন।

কো-পাইলট ক্লাইভ কুন্ডার ছিলেন একজন নবীন পাইলট, যাঁর প্রায় ১,১০০ ঘণ্টা উড়োজাহাজ চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল। তিনিও দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। বিনোদন জগতের অভিনেতা বিক্রান্ত মাসি তাঁর আত্মীয় ছিলেন।

দুর্ঘটনার সময়, ক্যাপ্টেন সাবহারওয়াল বিমানটি জনবহুল এলাকায় পড়ার পরিবর্তে খালি জায়গায় নামানোর চেষ্টা করেছিলেন, যাতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি না হয়। তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করে অন্যদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছিলেন। এই ঘটনা পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

এই দুর্ঘটনা ভারতের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। পাইলট ও কো-পাইলটের আত্মত্যাগ ও পেশাদারিত্ব আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যদের রক্ষা করার চেষ্টাই প্রকৃত সাহসিকতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × five =