উদয় ঘোষ :: সংবাদ প্রবাহ ::বর্ধমান :: বুধবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই প্রথম লেজারের মাধ্যমে অর্শ ও ফিশ্চুলার অস্ত্রপচার হল। জেলা হাসপাতালে লেজার ব্যবস্থায় এ ধরণের অস্ত্রপচার রাজ্যে প্রথম বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি। এদিন ৮ জন রোগীর অস্ত্রপচার করা হয়। অস্ত্রপচারের পর তাঁরা সকলেই সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
শুধু অস্ত্রপচার নয়, লেজারের মাধ্যমে কিভাবে অস্ত্রপচার করা হয় তা চিকিৎসকদের হাতেকলমে শেখানো হয়। পাশাপাশি অস্ত্রপচারে লেজারের প্রয়োগ নিয়ে কলকাতার বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ কল্যাণ কর প্রশিক্ষণ দেন। তিনিই অস্ত্রপচার করেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের বর্ধমান শাখা ও একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে অর্শ ও ফিশ্চুলার অস্ত্রপচারে লেজারের প্রয়োগ নিয়ে এদিনের ওয়ার্কশপ আয়োজিত হয়।
হাসপাতাল ও আইএমএ-র নথিভুক্ত প্রায় ৮০ জন চিকিৎসক এদিনের ওয়ার্কশপে অংশ নেন। হাসপাতালের শল্য বিভাগের সিনিয়র সার্জন ডাঃ নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, জেলা হাসপাতালে এ ধরণের অস্ত্রপচার হয়নি। এদিনের ওয়ার্কশপ থেকে অস্ত্রপচারে লেজারের ব্যবহার নিয়ে অনেক কিছু জানা গেল। এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। কলকাতা থেকে যন্ত্রপাতি আনা হয়েছিল। ৮ জন রোগীর অস্ত্রপচার হয়েছে। এ ধরণের অস্ত্রপচারে রোগীদের যন্ত্রণা কম সহ্য করতে হয়। কাটা-ছেঁড়া করতে হয়না।
অস্ত্রপচারের পর দু-তিন দিনের মধ্যে রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। রক্তপাত হয়না। ওষুধও কম প্রয়োগ করতে হয়। এ ধরণের ব্যবস্থা সরকারি হাসপাতালে চালু করা গেলে রোগীরা উপকৃত হবেন। ডাঃ কর বলেন, অনেকেই যন্ত্রণা এবং অস্ত্রপচার পরবর্তী সমস্যার কথা ভেবে অর্শ ও ফিশ্চুলা অপারেশন করাতে চান না।
কিন্তু, লেজার মাইক্রোসার্জারিতে অস্ত্রপচারের পর কোনও সমস্যা থাকে না। রক্তপাত হয়না। ২৪ ঘন্টার মধ্যে রোগী সুস্থ হন। খুব দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। অস্ত্রপচারের সময় যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়না।
এ ধরণের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সরকারি হাসপাতালে চালু হলে মানুষ উপকৃত হবেন। অস্ত্রপচার নিয়ে মানুষের ভীতিও কাটবে। কর্মব্যস্ত মানুষকে দীর্ঘদিন কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে না। জেলার হাসপাতালে এ ধরণের অস্ত্রপচার এই প্রথম। কলকাতায় বেসরকারি হাসপাতালে লেজার সার্জারির ব্যবস্থা আছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এ ধরণের অস্ত্রপচারে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।