নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কৃষ্ণগঞ্জ :: রবিবার ২৮,সেপ্টেম্বর :: নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের বিষ্ণুপুর সীমান্তের প্রত্যন্ত গ্রামে দুর্গাপুজো মানেই একচালির প্রতিমা। আলোকসজ্জা নেই, জমকালো আয়োজনও নয়।
তবু গ্রামবাসীর কাছে এই পুজোর টান আলাদা। কারণ, এই পুজোর মূর্তি গড়েন গ্রামেরই কয়েকজন ছেলে, যারা সারা বছর কলকাতার কুমোরটুলিতে কাজ করেন।
কলকাতার অভিজাত মণ্ডপে তাঁদের হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হয় লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতিমা। হাজার হাজার মানুষের ভিড়ে সেই শিল্পকর্মে ভক্তি ও বিস্ময় মেশে। অথচ, যে গ্রামে তাঁদের জন্ম, সেই গ্রামের সাধারণ মানুষ কোনও দিনই সুদূর কলকাতায় গিয়ে সেই প্রতিমা দেখা বা পুজোর ভিড়ে সামিল হওয়ার সুযোগ পান না।
তাই প্রতিবছর দুর্গাপুজোর ঠিক আগে, বাড়ি ফেরেন ওই শিল্পীরা। বিনা পারিশ্রমিকে গড়ে তোলেন একচালির প্রতিমা। নিজের পরিবারের জন্য, প্রতিবেশীর জন্য, গ্রামের মানুষের জন্য। যেন শহরের গ্ল্যামারের ছোঁয়া এসে মেশে সীমান্তের মাটির গন্ধে।
কয়েক দিনের মধ্যেই আবার তাঁদের ফিরতে হয় কলকাতার কুমোরটুলির কাজে। আলো-ঝলমলে শহরের প্যান্ডেলে তাঁদের গড়া প্রতিমা দেবী দর্শনের মূল আকর্ষণ হয়ে ওঠে।
তবে এই গ্রামের পুজোয় তাঁদের হাতের আরেক রূপ দেখে গর্বে বুক ভরে যায় গ্রামবাসীর।গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, “কলকাতায় গিয়ে প্রতিমা দেখার সাধ আমাদের পূর্ণ হয় না। কিন্তু এই ছেলেদের জন্যই গ্রামের মাঠে আমরা দেবীকে পাই। এ যেন আমাদের পুজোরও উৎসব।”