নবপত্রিকার স্নান দিয়ে শুরু মহাসপ্তমী

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: বাঁকুড়া :: সোমবার ২৯,সেপ্টেম্বর :: দুর্গা পুজো শুরু হয়ে গিয়েছে মহা ধূমধামের সঙ্গে। এদিন সকালে নবপত্রিকা বা কলাবউ স্নান করানোর রীতি প্রচলিত রয়েছে। নবপত্রিকাই কলাবউ নামে পুজোর চারদিন গণেশ ঠাকুরের পাশে থাকে। মহাসপ্তমীতে দুর্গাপুজোর ঘট স্থাপন করা হয়।

নবপত্রিকা এই রাজ্যের দুর্গাপুজোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর অর্থ ন-টি গাছের পাতা। তবে বাস্তবে নবপত্রিকা নটি পাতা নয়, নটি উদ্ভিদ। এগুলি হল – কদলী বা রম্ভা (কলা), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (দাড়িম), অশোক, মান ও ধান।

পাতা-সহ একটি কলাগাছের সঙ্গে বাকি আটটি শিকড় ও পাতা সহ উদ্ভিদ একসঙ্গে করে একজোড়া বেল সহ শ্বেত অপরাজিতার লতা দিয়ে বেঁধে লালপাড় সাদা শাড়ি জড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া বধূর মতো আকার দেওয়া হয়।

তারপর তাতে সিঁদুর দিয়ে সপরিবার দুর্গা ঠাকুরের ডান দিকে গণেশের পাশে দাঁড় করিয়ে পুজো করা হয়। পুজোমণ্ডপে নবপত্রিকা প্রবেশের মাধ্যমে পুজোর মূল অনুষ্ঠানটির সূচনা হয়। এর পর দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়।

এরপর বাকি দিনগুলিতে নবপত্রিকা অন্য দেবদেবীদের সঙ্গেই পূজিত হয়। শাস্ত্র অনুসারে নবপত্রিকার ৯টি উদ্ভিদ দেবী দুর্গার ৯টি বিশেষ রূপের প্রতিনিধি রূপে পূজিত হয়।

এই ৯ দেবী হলেন রম্ভাধিষ্ঠাত্রী ব্রহ্মাণী, কচ্বাধিষ্ঠাত্রী কালিকা, হরিদ্রাধিষ্ঠাত্রী উমা, জয়ন্ত্যাধিষ্ঠাত্রী কার্তিকী, বিল্বাধিষ্ঠাত্রী শিবা, দাড়িম্বাধিষ্ঠাত্রী রক্তদন্তিকা, অশোকাধিষ্ঠাত্রী শোকরহিতা, মানাধিষ্ঠাত্রী চামুণ্ডা ও ধান্যাধিষ্ঠাত্রী লক্ষ্মী।

বাঁকুড়া জেলার গন্ধেশ্বরী নদীর পাঠকপাড়া ঘাটে ও খাতড়ার শশ্মান কালী মন্দিরের জলাশয়ে নবপত্রিকার স্নান পর্ব চলে।
পুরোহিত নিজেই কাঁধে করে নবপত্রিকা নিয়ে যান। তাঁর পিছনে ঢাকীরা ঢাক সানাই বাজাতে বাজাতে এবং মহিলারা কলস যাত্রা শঙ্খ ও উলুধ্বনি করতে করতে যান।
নবপত্রিকার স্নান পর্ব দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় নদী ঘাটে লক্ষ্য করা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + fourteen =