অমৃতসর-সহরসা গরিবরথ এক্সপ্রেসে আগুন — পুড়ে গেল কামরা, যাত্রীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা ::সংবাদ প্রবাহ :: নিউজ ডেস্ক (অমৃতসর) :: শনিবার ১৮,অক্টোবর :: অমৃতসর থেকে বিহারের সহরসার উদ্দেশে রওনা দেওয়া গরিবরথ এক্সপ্রেসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার গভীর রাতে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।

ট্রেনটি পাঞ্জাবের লুধিয়ানা স্টেশন পার হওয়ার পরপরই হঠাৎ একটি কামরায় আগুন লাগে বলে জানা গেছে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের কামরাগুলিতেও। এতে যাত্রীদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দ্রুত ট্রেন থামার আগেই জানালা ও দরজা ভেঙে বাইরে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

                                                                               

                                                                                 চিত্র ইন্টারনেট  থেকে সংগৃহীত

রেল সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ট্রেনের এস–৬ কামরায়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়।

ট্রেনটি তৎক্ষণাৎ থামিয়ে দেওয়া হয় এবং দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হয়। লুধিয়ানা, ফগওয়ারা ও ফিল্লৌর স্টেশন থেকে দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

অগ্নিকাণ্ডে ঠিক কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। রেল আধিকারিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেউ গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়েছেন কিনা তা যাচাই চলছে। তবে একাধিক যাত্রী সামান্য দগ্ধ হয়েছেন ও কয়েকজন শ্বাসকষ্টে ভুগছেন বলে খবর। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ঘটনাটি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্নিকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের সবরকম সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

অন্যদিকে, যাত্রীরা অভিযোগ তুলেছেন যে, ট্রেনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কার্যত অকেজো ছিল। অনেক সময়েও ট্রেন থামানো হয়নি বলে অভিযোগ।

রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং ট্রেনের বাকিদের নিরাপদে অন্য কামরায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে রেল সুরক্ষা বাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী এক যাত্রী জানান, “হঠাৎ ধোঁয়া উঠতে দেখি। সবাই চিৎকার শুরু করে। আমরা দরজা খুলে দ্রুত বাইরে বেরোই, না হলে ভয়ানক বিপদ হত।”

রেল দফতর জানিয়েছে, আপাতত সহরসাগামী গরিবরথ এক্সপ্রেসের পরিষেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই রুটে অন্যান্য ট্রেনও বিলম্বে চলছে।

ঘটনাটি রেল নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। যাত্রীরা এখন আতঙ্কে— “রাতের ট্রেনযাত্রা কতটা নিরাপদ?” — এই প্রশ্নই ঘুরছে সকলের মুখে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − twelve =