পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসার রাজকুসুম গ্রামে শাল পিয়ালের ঘন জঙ্গলে আজও একই ভাবে জনপ্রিয় বনকালী।

নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: কাঁকসা :: বুধবার ২২,অক্টোবর :: প্রতি বছরের মতো এবছরও মহা ধুমধামে পুজোর আয়োজন করা হয়। প্রতিবছর কালীপুজোর পরের দিন জঙ্গলের মধ্যেই বনকালীর মহা ধুমধামে পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে।

পুজোর সূচনা হয়েছিল আনুমানিক ৫০০ বছর আগে। রাজকুসুম গ্রামের রায় পরিবারের সদস্য সনৎ কুমার রায় জানিয়েছেন, তাঁদেরই পূর্বপুরুষ এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। পূর্বে জঙ্গলের মধ্যেই মূর্তি এনে পুজোর আয়োজন করতো। পুজোর পুরোহিত ছিলেন কাঁকসার গোপালপুরের ভট্টাচার্য বাড়ির সদস্য।সেই সময় পুরোহিতকে রীতিমতো লাঠিয়াল সঙ্গে করে নিয়ে জঙ্গলে আনা হত। গোটা এলাকায় মাঠে ধান চাষ হত। ছিলো না তেমন রাস্তা ঘাট। তার সঙ্গে ছিল এলাকায় হিংস্র পশুর বাস। ধান খেতের মাঠের আল দিয়ে লাঠিয়াল দিয়েই আনা হত পুরোহিতকে। একবছর প্রবল বৃষ্টির সময় মাঠের আল দিয়ে জঙ্গলে যেতে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল সকলকে।

সেই বছর পুরোহিত স্বপ্নাদেশ পান। দেবী কালী তাঁকে তাঁর বাড়িতেই পুজো করতে বলেন। প্রায় ১০০ বছর আগে দেবীর নির্দেশ মেনে কাঁকসার গোপালপুর গ্রামে। ভট্টাচার্য পরিবারে শুরু হয় দেবী কালীর পুজো।

যেহেতু জঙ্গলে বহু বছর ধরে পুজো হত তাই পুরোহিত দেবীর কাছে জানতে চেয়েছিল জঙ্গলে মূর্তি না থাকলে সেখানে সে কোথায় পুজো দেবে। উত্তরে দেবী তাঁকে জানিয়েছিলেন জঙ্গলের মধ্যে একটি গাছের গায়ে দুটো চোখের আকৃতি দেখা যাবে সেই গাছেই তিনি বিরাজমান থাকবেন।

সেই গাছের গোড়ায় মূর্তি ছাড়াই হবে পুজো। ভক্তরা নিজেই আসবে পুজো দিতে। তাই রীতি মেনে কালীপুজোর পরের দিন রাজকুসুম গ্রামে জঙ্গলের মধ্যে আজও একই ভাবে চলে বনকালীর পুজো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × 2 =