নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: অন্ধ্রপ্রদেশ :: শনিবার ১,নভেম্বর :: অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলম জেলার বিখ্যাত ভেন্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে শনিবার সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ এক ভয়াবহ পদপিষ্টের ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত নয়জন পুণ্যার্থীর।
নিহতদের মধ্যে রয়েছে একটি শিশু ও কয়েকজন মহিলা। আহত হয়েছেন আরও বহু দর্শনার্থী, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
কার্তিক মাসের একাদশী উপলক্ষে এদিন ভোর থেকেই ভেন্কটেশ্বর স্বামী মন্দিরে হাজার হাজার ভক্ত সমবেত হন। মন্দিরের প্রধান ফটক খোলার সঙ্গে সঙ্গেই দর্শনার্থীদের বিশাল ভিড় তৈরি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, মন্দিরে প্রবেশের সময় একটি গ্রিল বা বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে পড়ে, এবং মুহূর্তের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে যায়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই পদপিষ্ট হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বহু মানুষ।
স্থানীয় পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, “অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে। হঠাৎ করে সামনের সারির কয়েকজন পড়ে গেলে পেছনের জনতা ঠেলে দিলে প্রাণহানি ঘটে।”
দুর্ঘটনার পরপরই পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী কাসিবুগ্গা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক ও মন্দির কর্তৃপক্ষও উদ্ধারকাজে অংশ নেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে ভিশাখাপত্তনম মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক্স (Twitter)-এ শোকবার্তা জানিয়ে বলেন, “অন্ধ্রপ্রদেশে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছেন।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এন. চন্দ্রবাবু নাইডু ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতদের পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। তিনি বলেন, “এই দুর্ঘটনা হৃদয়বিদারক। ভিড় নিয়ন্ত্রণে সমন্বয়ের ঘাটতি ছিল বলে মনে হচ্ছে। আমরা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি।”
একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, মন্দির কর্তৃপক্ষ আগাম সতর্কতা নেয়নি। একাধিক বছর ধরে একাদশীর দিনে বিপুল ভিড় হয়, অথচ এবার পর্যাপ্ত ব্যারিকেড বা পুলিশবাহিনী ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, “যদি আয়োজকরা আগেই প্রশাসনকে জানান দিতেন, এ দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।”।

