নিজস্ব সংবাদদাতা :: সংবাদ প্রবাহ :: নিউজ ডেস্ক :: রবিবার ২,নভেম্বর :: ভারতের মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে আবারও এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো। ভারতের নিজস্ব শক্তিশালী ‘বাহুবলী রকেট’ (GSLV Mk-III বা LVM-3)-এর মাধ্যমে ৪৪১০ কিলোগ্রাম ওজনের একটি আধুনিক যোগাযোগ উপগ্রহ সফলভাবে মহাশূন্যের পথে পাড়ি জমিয়েছে।
শনিবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়। স্থানীয় সময় সকাল ৫টা ৩৫ মিনিটে রকেটটি নির্ধারিত সময়েই উৎক্ষেপিত হয়।
উৎক্ষেপণের ১৮ মিনিট পরেই উপগ্রহটি সফলভাবে জিওসিনক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিটে (GTO) স্থাপন করা হয়। এটি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO)–এর চলতি বছরের অন্যতম বড় মিশন।
উৎক্ষেপিত এই ৪৪১০ কেজির উপগ্রহটির নাম GSAT-XX (সম্ভাব্য নাম, ISRO এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়নি)। এটি উন্নতমানের যোগাযোগ, ইন্টারনেট সংযোগ এবং টেলিভিশন সম্প্রচারের মান বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
ভারতের গ্রামীণ ও দুর্গম অঞ্চলে উচ্চগতির ডেটা সংযোগ নিশ্চিত করতে এই স্যাটেলাইটটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে জানানো হয়েছে।
‘বাহুবলী’ নামে পরিচিত GSLV Mk-III (Geosynchronous Satellite Launch Vehicle – Mark III) হলো ভারতের সবচেয়ে ভারবাহী রকেট। এটি প্রায় ৪ টনের বেশি ওজনের উপগ্রহ কক্ষপথে বহন করতে সক্ষম। এই রকেটেই চেপে ২০১৯ সালে ঐতিহাসিক চন্দ্রযান–২ মহাশূন্যে গিয়েছিল।
উৎক্ষেপণের পর ISRO–এর চেয়ারম্যান ড. এস. সোমনাথ বলেন, “এটি ভারতের মহাকাশ প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। ‘বাহুবলী’ রকেটের প্রতিটি মিশনে আমরা আরও আত্মবিশ্বাসী হচ্ছি।” তিনি আরও জানান, এই সাফল্য ভারতের ভবিষ্যৎ গভীর মহাকাশ অভিযান, যেমন গগনযান মানব মিশন, আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ISRO আগামী মাসগুলিতে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে—এর মধ্যে রয়েছে গগনযান পরীক্ষামূলক ফ্লাইট এবং আদিত্য–এল১ মিশনের পরবর্তী পর্যায়।
ভারতের এই সাফল্য আবারও প্রমাণ করল যে দেশটি এখন বিশ্ব মহাকাশ প্রযুক্তির অন্যতম শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। ‘বাহুবলী’ রকেটের এই সফল উড্ডয়ন শুধু প্রযুক্তিগত উন্নতির নয়, বরং ভারতের আত্মনির্ভর মহাকাশ অভিযানের এক উজ্জ্বল প্রতীক।

