সুদেষ্ণা মন্ডল :: সংবাদ প্রবাহ :: নরেন্দ্রপুর :: বিহারের মধেপুরা জেলার আলম নগর থানার বৈশালী গ্রামের বাসিন্দা সতীশ শাহ ২০১০ সালে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যান। সেই সময় স্থানীয় আলম নগর থানায় একটি নিখোঁজ অভিযোগ করার পর দু’বছর পর পুলিশি তৎপরতায় বাড়ির লোকেরা তাকে ফিরে পায়।
এরপর তাকে চিকিৎসা করার পর তারা জানতে পারে সতীশ শাহ মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। তারপর থেকে বাড়ির সকলেই তার ওপর নজর রাখলেও ২০১২ সালে আবারো একদিন তিনি বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান।এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পায় না বাড়ির লোক।
বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান ,গত এক সপ্তাহ আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থানার ঢোসা চন্দেনেশ্বরে এক বৃদ্ধকে সন্দেহজনক ভাবে চলাফেরা করতে দেখে এলাকার মানুষ । সেই খবর পেয়ে প্রত্যয় নামে এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য দেবব্রত হালদার বারুইপুর মহিলা থানার আই.সি কাকলি ঘোষ কুন্ডুকে পুরো ঘটনা জানায় ।
এর পর কাকলি ঘোষ কুন্ডু তার পরিচিত এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্নধার অসীমা দেকে বিষয়টি জানান । অসীমা দে বিষয়টির গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ করলে জানতে পারেন, ঢোসা চন্দেনেশ্বর এলাকার পিন্টু নস্কর ও সুবল মন্ডল ঐ বৃদ্ধকে একটি জায়গায় রেখে খাওয়ার দেওয়ায় ব্যবস্থা করেছে । তাদের সাথে যোগাযোগ করে ঐ বৃদ্ধর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন এবং হ্যাম রেডিওর সাথে যোগাযোগ করেন।
হ্যাম রেডিওর পক্ষ থেকে ওই বৃদ্ধর পরিচয় জানার সররকমের চেষ্টা চালানো হয়। অবশেষে তার ঠিকানা খুঁজে পায় হ্যাম রেডিওর কর্নধার অম্বরিস নাগ বিশ্বাস ।উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা জানতে পারেন ওই ব্যক্তির বাড়ি বিহারের মাধেপুরা জেলার আলম নগর থানার বৈশালি গ্রামে। বৃদ্ধার বাড়ির লোকজনকে খবর দেওয়া হয় । খবর পেয়েই বিহার থেকে গাড়ি নিয়ে গোটা পরিবার ছুটে আসেন জয়নগর থানায়।
শনিবার সকালে জয়নগর থানার আই.সি অতনু সাঁতরা বৃদ্ধকে ঢোসা চন্দনেশ্বর গ্রাম থেকে থানায় নিয়ে আসেন । এরপর তার বাড়ির লোকের সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলার পর তাদের হাতে তুলে দেন সতীশ শাহকে ।
অন্যদিকে দশ বছর পর নিজের স্বামীকে খুঁজে পেয়ে খুশি স্ত্রী রাগিয়া দেবী । অন্যদিকে নিখোঁজ দাদাকে দশ বছর পর এভাবে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে পেয়ে খুশি ভাই নিরোজ কুমারও ।এই ভাবে পরিবারের সদস্যকে ফিরে পাওয়ায় অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি পুলিশ এবং হ্যাম রেডিওর সদস্যদের । তার জানান এই আন্তরিকতায় ও সহযোগিতায় পরিবারের হারিয়ে যাওয়া মানুষকে ফিরে পেলাম,এটা ঈশ্বরের বড় দান।